ঢাকা ০৪:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo বানিয়াচংয়ে স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার Logo এমপি মজিদ খানের মধ্যস্থতায় বানিয়াচং সৈদারটুলা ছান্দের ২ গ্রুপের দ্বন্দ্ব নিরসন Logo মিশর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান পাওয়ায় মুফতি হাফিজুল হককে সংবর্ধনা প্রদান Logo আজমিরীগঞ্জে নিত্যপণ্যের মূল্য চড়া: ক্রেতাদের নাভিশ্বাস Logo একজন কর্মবীর সফল এমপি আব্দুল মজিদ খান Logo বানিয়াচংয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ’কে বিদায় সংবর্ধনা Logo জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী মনজুর চৌধুরী Logo বানিয়াচংয়ে ইফা শিক্ষকদের নিয়ে ক্লাস্টার ট্রেনিং অনুষ্ঠিত Logo আজমিরীগঞ্জে পুলিশের অভিযানে ২০লিটার চোলাই মদ জব্দ : আটক-১ Logo প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) হলেন গোটা জাতির জন্য উত্তম আদর্শ

হাওরের কিংবদন্তিঃ বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত

  • তরঙ্গ ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০২:২৩:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুলাই ২০২০
  • ১২০ বার পড়া হয়েছে

এড. আবুল হাসেম মোল্লা মাসুম: হাওরের কিংবদন্তিঃ বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এমপি বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পিতার নাম দেবেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, মাতার নাম সুমতিবালা সেনগুপ্ত। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত যখন মায়ের গর্ভে তখন তাঁর বাবা মারা যান।জন্মের তিন বছর পর হারান মাকে।

১১ বছর বয়সে ওনার ভাই বোন ওনাকে জোর করে কলকাতায় নিয়ে যান, কলকাতায় নেয়ার তিন মাসের মাথায় পালিয়ে দিরাই চলে আসেন এই ভাটির পুরুষ। তারপর তিনি এই দিরাইয়ের আলো বাতাসে একাই বড় হোন, এবং দিরাইয়ের স্থানীয় লোকজন ওনার অভিবাবক হিসাবে লালন পালন করেন।

ভাটির কিংবদন্তী দিরাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের
সাথে মেট্রিকুলেশন পাশ করে সিলেট এমসি কলেজে এইচএসসি’তে ভর্তি হন।

স্কুল জীবন থেকেই অভিনয়ের পারদর্শিতা ছিল তার।
কলেজে বিভিন্ন নাটক মঞ্চায়ন করে তিনি
সকলের ভালবাসার পাত্র হয়ে উঠেন।

কলেজে পড়াকালীন সময়েই ছাত্র ইউনিয়ের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন।

এইচএসসি পাসের পর ভর্তি হন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইতিহাস বিভাগে ভর্তি
হয়ে জগন্নাথ হলে থাকতেন তিনি। তখন তিনি মঞ্চাভিনেতার শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার পেয়েছেন কয়েকবার।

তিনি তার নিজের মেধা আর প্রজ্ঞায় স্থান করে নেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সেন গুপ্ত ১৯৬৯ সালের গনভ্যুত্থানে রেখেছিলেন অনন্য ভুমিকা। ঢাকা সেন্ট্রাল ল কলেজ থেকে এলএলবি পাস করেন।

১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচন ন্যাপ থেকে কুঁড়েঘর মার্কা নিয়ে দেশের সর্বকনিষ্ঠ প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে চমক লাগিয়ে দেন। তার নির্বাচনি এলাকা ছিল(দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ) ।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকাল তিনি ৫নং
সেক্টরের বালাট সাব-সেক্টর কমান্ডার
হিসেবে দ্বায়িত্বই শুধু পালন করেন বীরদর্পে করেছেন অনেক সম্মুখ স্বশস্র যুদ্ধ ।

১৯৭২ সালে গণপরিষদ গঠিত হলে তিনি ছিলেন একমাত্র বিরোধী দলিয় সদস্য। তার গঠনমুলক সমালোচনা আর বিভিন্ন তির্যক মন্তব্যের কারনে বঙ্গবন্ধু তা‌কে খুব ভালবাসতেন এবং উৎসাহ দিতেন।বঙ্গবন্ধু তাকে বলতেন ” সুরঞ্জিত তুমিই আমার একমাত্র গনতন্ত্র”। আর এরপর থেকে আর পেছনে থাকাতে হয়নি ভাটির শার্দূল কে।

একমাত্র বিরোধী দলিয় সদস্য হিসেবে ছিলেন
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য। শুধু তাই নয় অস্ট্রেলিয়ার সংবিধান প্রনয়নকারীদেরও একজন ছিলেন আমাদের এই অংকার।

১৯৭৩, ১৯৮৯, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ সালে অনুস্টিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি এমপি নির্বাচিত হন।

৮ বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত স্বাধীন বাংলাদেশের সকল গনতান্ত্রীক অর্জনের সফল অংশীদার।

দল বিরূধী দলে থাকাকালীন এই মহান নেতার আত্মত্যাগ দেশবাসী চিরদিন মনে রাখবে।

তার মেধা,শ্রম,রক্ত, ঘাম দিয়ে তিনি এই দেশকে অসাম্প্রদায়িক করে তুলতে যে ত্যাগ করেছেন তা আজীবন স্বরনীয়।

এই দেশ যতদিন থাকবে, আওয়ামীলীগ যতদিন থাকবে, স্বাধীনতার চেতনা যতদিন থাকবে ততদিন থাকবেন ভাটির পুরুষ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

বানিয়াচংয়ে স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

হাওরের কিংবদন্তিঃ বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত

আপডেট সময় ০২:২৩:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুলাই ২০২০

এড. আবুল হাসেম মোল্লা মাসুম: হাওরের কিংবদন্তিঃ বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এমপি বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পিতার নাম দেবেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, মাতার নাম সুমতিবালা সেনগুপ্ত। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত যখন মায়ের গর্ভে তখন তাঁর বাবা মারা যান।জন্মের তিন বছর পর হারান মাকে।

১১ বছর বয়সে ওনার ভাই বোন ওনাকে জোর করে কলকাতায় নিয়ে যান, কলকাতায় নেয়ার তিন মাসের মাথায় পালিয়ে দিরাই চলে আসেন এই ভাটির পুরুষ। তারপর তিনি এই দিরাইয়ের আলো বাতাসে একাই বড় হোন, এবং দিরাইয়ের স্থানীয় লোকজন ওনার অভিবাবক হিসাবে লালন পালন করেন।

ভাটির কিংবদন্তী দিরাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের
সাথে মেট্রিকুলেশন পাশ করে সিলেট এমসি কলেজে এইচএসসি’তে ভর্তি হন।

স্কুল জীবন থেকেই অভিনয়ের পারদর্শিতা ছিল তার।
কলেজে বিভিন্ন নাটক মঞ্চায়ন করে তিনি
সকলের ভালবাসার পাত্র হয়ে উঠেন।

কলেজে পড়াকালীন সময়েই ছাত্র ইউনিয়ের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন।

এইচএসসি পাসের পর ভর্তি হন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইতিহাস বিভাগে ভর্তি
হয়ে জগন্নাথ হলে থাকতেন তিনি। তখন তিনি মঞ্চাভিনেতার শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার পেয়েছেন কয়েকবার।

তিনি তার নিজের মেধা আর প্রজ্ঞায় স্থান করে নেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সেন গুপ্ত ১৯৬৯ সালের গনভ্যুত্থানে রেখেছিলেন অনন্য ভুমিকা। ঢাকা সেন্ট্রাল ল কলেজ থেকে এলএলবি পাস করেন।

১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচন ন্যাপ থেকে কুঁড়েঘর মার্কা নিয়ে দেশের সর্বকনিষ্ঠ প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে চমক লাগিয়ে দেন। তার নির্বাচনি এলাকা ছিল(দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ) ।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকাল তিনি ৫নং
সেক্টরের বালাট সাব-সেক্টর কমান্ডার
হিসেবে দ্বায়িত্বই শুধু পালন করেন বীরদর্পে করেছেন অনেক সম্মুখ স্বশস্র যুদ্ধ ।

১৯৭২ সালে গণপরিষদ গঠিত হলে তিনি ছিলেন একমাত্র বিরোধী দলিয় সদস্য। তার গঠনমুলক সমালোচনা আর বিভিন্ন তির্যক মন্তব্যের কারনে বঙ্গবন্ধু তা‌কে খুব ভালবাসতেন এবং উৎসাহ দিতেন।বঙ্গবন্ধু তাকে বলতেন ” সুরঞ্জিত তুমিই আমার একমাত্র গনতন্ত্র”। আর এরপর থেকে আর পেছনে থাকাতে হয়নি ভাটির শার্দূল কে।

একমাত্র বিরোধী দলিয় সদস্য হিসেবে ছিলেন
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য। শুধু তাই নয় অস্ট্রেলিয়ার সংবিধান প্রনয়নকারীদেরও একজন ছিলেন আমাদের এই অংকার।

১৯৭৩, ১৯৮৯, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ সালে অনুস্টিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি এমপি নির্বাচিত হন।

৮ বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত স্বাধীন বাংলাদেশের সকল গনতান্ত্রীক অর্জনের সফল অংশীদার।

দল বিরূধী দলে থাকাকালীন এই মহান নেতার আত্মত্যাগ দেশবাসী চিরদিন মনে রাখবে।

তার মেধা,শ্রম,রক্ত, ঘাম দিয়ে তিনি এই দেশকে অসাম্প্রদায়িক করে তুলতে যে ত্যাগ করেছেন তা আজীবন স্বরনীয়।

এই দেশ যতদিন থাকবে, আওয়ামীলীগ যতদিন থাকবে, স্বাধীনতার চেতনা যতদিন থাকবে ততদিন থাকবেন ভাটির পুরুষ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।