হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ বিচারপতি,মন্ত্রী,এমপি,আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার, নৌ বাহিনীর কমোডরের সাথে ছবি তুলে ফেইসবুকে প্রচার করে নিজেকে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত করে প্রতারণার ফাঁদ পেতে সাধারণ লোকজনের সাথে প্রতারনাকারী যুবক শাহ আফজাল হোসেনকে জেল গেইটে দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার ( ১৩ আগস্ট ) দুপুরে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মোঃ টিপু নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা আত্মসাদের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহ আফজালের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামানা, অ্যাডভোকেট সামছুল হক, আদালত পরিদর্শক আল আমিন ও জিয়াউর রহমান। আসামীর পক্ষে শুনানীতে অংশ নেন সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আকবর হোসেন জিতু ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরু মিয়া। দীর্ঘ শুনানী শেষে বিজ্ঞ বিচারক দুই দিনের জেল গেইটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
আদালত পরিদর্শক আল আমিন জানান, বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানী ছাড়াও ফারুক মিয়া নামে এক ব্যক্তির দায়েরকৃত প্রতারণা মামলায় আফজালকে শ্যোন এ্যারেস্ট দেখানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাহ আফজাল হোসেন ভিআইপিদের সাথে ছবি দেখিয়ে এলাকায় প্রচার করে বঙ্গভবন, গণভভন ও সচিবালয়ে তার অবাধ যাতায়াতের সুযোগ রয়েছে। যে কোন কাজ সে করে দিতে পারে। কোন কোন স্থানে সে নিজেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হিসাবেও প্রচার করে। সিলেট থেকে ঢাকায় ডমেস্টিক ফ্লাইটে ভ্রমণ করে সেই ছবিও মাঝে মাঝে পোস্ট দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দেয় সে। আর সাধারণ লোকজন এই ছবি দেখে বিশ্বাস করে শাহ আফজাল এর মাধ্যমে সব কাজই সম্ভব। ফলে বিভিন্ন লোকজন ঠিকাদারী কাজ,চাকুরী, জামিন, জমির দলিল ও পর্চা ঠিক করে দেয়া, নিবন্ধন পরীক্ষায় পাশ, স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন এবং বিদেশের ভিসা পেতে লক্ষ লক্ষ টাকা দেয় তাকে। কিন্তু টাকা দেয়ার পর কোন কাজই সে না করে সে টাকা হাতিয়ে নেয়। টাকা ফেরত চাইলে পাল্টা হুমকি দিয়ে বলে বিচারপতি তার আত্মীয়। বড় বড় কর্মকর্তারা তার পকেটে। বাড়াবাড়ি করলে সে ফাঁসিয়ে দিবে। ফলে প্রতারিত হয়েও কেউ মুখ খুলেনি এতদিন তার বিরুদ্ধে। পরে হবিগঞ্জ সদর থানায় প্রতারণার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শায়েস্তানগর এলাকার ঠিকাদার মোহাম্মদ টিপু ও রিচি গ্রামের ফারুক মিয়া। আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকার সহিদুল ইসলামের মেয়ে খাদিজা আক্তার নাসরিন।
শাহ আফজাল হোসেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আউশপাড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার আব্দুল হেকিমের ছেলে। সে হাই স্কুলের লেখাপড়া শেষ করতে পারেনি। এক পর্যায়ে আনসারে চাকুরী নিলেও দুর্নীতির কারনে চাকুরিচ্যুত হয় সে। পরে সিলেটে গিয়ে এক সাংবাদিকের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নিয়ে বড় বড় নেতাদের সাথে ছবি তোলার সুযোগ খুঁজতে থাকে। এভাবে সে বিভিন্ন নেতাদের কাছে চলে যায়। এক পর্যায়ে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা,মন্ত্রী এমপিদের সাথেও ছবি তুলে তা ফেইসবুকে পোস্ট করে। বেশ কয়েকজন লন্ডন প্রবাসীর সাথেও ব্যক্তিগত পরিচয় সৃষ্টি করে। সে কোন পদবীধারী না হলেও সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের চিঠিও পেয়ে থাকে।
সংবাদ শিরোনাম ::
হবিগঞ্জের শাহেদ খ্যাত প্রতারক আফজালকে জেল গেইটে দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ
-
তরঙ্গ ২৪ ডেস্ক :
- আপডেট সময় ০১:১৯:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২০
- ২৮ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ