ঢাকা ০৬:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্ছ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার : এমপি মজিদ খান Logo ভূমি ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে: এমপি মজিদ খান Logo আরাকান রাজ্যের ইতিহাস Logo বানিয়াচংয়ে ব্যবসায়ী নেতা মতিউর রহমান মতির উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo বানিয়াচংয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান: ৬ হাজার টাকা জরিমানা Logo মিরপুর ইসলামী একাডেমীর নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধন Logo বানিয়াচংয়ের তাহমিদুল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক নিযুক্ত Logo বানিয়াচংয়ে ফের সংঘর্ষ : ১জন নিহত Logo বানিয়াচংয়ে আইডিয়েল কলেজের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন Logo বানিয়াচংয়ে ভূমি সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন

সব কিছুতেই জিন্দাবাদ

  • তরঙ্গ ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৩:০৫:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০
  • ৪২ বার পড়া হয়েছে
আশরাফুল ইসলাম কহিনুর : এক সময় পত্রিকায়, কিংবা ফেইসবুকে চোখ রাখতেই যখন দেখতাম কোন সংবাদকর্মী জেলে, সহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, তখন খুব আতকে উঠতাম, হতবাক হতাম, উদ্বিগ্ন হয়ে উঠতাম। কিন্তু এখন আর হইনা। বরং এটাইতো এখন হওয়ার কথা! তাহলে সমস্যাটা কোন জায়গায়? সমস্যাটা হচ্ছে আমরা আমরার মধ্যেই নেই!
আমরা যারা সংবাদপত্রে কিংবা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কাজ করি তারা নিজেদেরকে অনেক বড় সাংবাদিক! অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব মনে করি। অথচ একবারও কি আমরা চিন্তা করে দেখেছি আমাদের অবস্থানটা কোন জায়গায়? যদি দেখতাম তাহলে আরও ভালো থাকতাম।
কেউ কেউ বলবেন, সংবাদ পত্র রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ, সাংবাদিকরা সমাজের আয়না, আরে ভাই সবই ঠিক আছে, কিন্তু এগুলো হচ্ছে কিতাবের কথা। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বড় বড় কর্তা ব্যক্তিরা ডায়েচে দাঁড়িয়ে আমাদের বাহবা দেন! কিন্তু বাস্তবে কি আমরা তাই? এসব প্রশ্নের উত্তর আমরা সংবাদকর্মীরা খুঁজে বেড়াই না।
করোনা ভাইরাস তামাম দুনিয়া জুড়ে এক মহা সঙ্কট তৈরী করেছে। বিচিত্র স্বভাবের বিচিত্র মানুষ আজ গৃহবন্দি। নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই রাষ্টের নির্দেশে মানুষ নিজেদের ঘরে অবস্থান করছেন। ফলে কর্মজীবি মানুষ হয়ে পড়েন কর্মহীন। এতে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারগুলোতে অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরী হয়। সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। রাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, ইমাম, মোয়াজ্জিনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ও দরিদ্র পরিবারগুলোকে প্রণোদনার আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ, বা সমাজের আয়না’রা কি পেলেন? হিসাব মিলান আমাদের মূল্যায়নের জায়গাটা কোথায়? অবস্থানটা কোন জায়গায়?
দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমরা কেউ কেউ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের পকেটে, আবার কেউ কেউ জনপ্রতিনিধিদের পকেটে অবস্থান করি। এটা খারাপ আমি সেটা বলছি না, খারাপ সেটা যখন আমরা ভুলে যাই আমাদের পেশাদারিত্ব। তবে ভুলটা আমাদের তখনই ভাঙ্গে যখন চার দেয়ালের প্রকোষ্টে নিক্ষিপ্ত হই। তখন কেউ পাশে থাকে না। আমাদের চারপাশ পাল্টে যায়। পরিচিত চেহারাগুলো রহস্যময় হয়ে আবির্ভূত হয়। তখন একা একা লড়াই করে ঠিকে থাকা যায় না। একদিন শক্তির কাছে হার মানতেই হয়। তবে আশার কথা হচ্ছে- নির্যাতিত সংবাদকর্মীর সারি দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে, এই সারি‌তে আপনে-আমাকেও একদিন দাঁড়াতে  হতে পারে। সেই পথ আমরাই তৈরী করে দিচ্ছি।
মাঝে মাঝে এক সাংবাদিক বড় ভাইয়ের সাথে যখন ফোনে কথা হয়, তখন তিনি খুব আক্ষেপ করে বলেন- “আমরা এখন সাংবাদিকতা করছি না। রাজা-বাদশাদের আমলে প্রচারের দায়িত্ব পালন করতো ঢুলিরা। আমরা এখন ঢুলির দায়িত্ব পালন করছি।” উনার যুক্তির সাথে  দ্বিমত পোষণ করার উপায় নেই, আমরা নিজেদের পেশাদারিত্ব ছেড়ে দিয়েছি। নিজেদের পেশার সুনাম-ঐতিহ্য নিজেরাই ধ্বংস করছি।
এখন নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ঢুলির দায়িত্ব পালন করব না সাংবাদিকতা করব? যদি ঢুলির দায়িত্ব পালন করতে হয় তাহলে কিসের প্রতিবাদ, সব কিছুতেই জিন্দাবাদ।
লেখক : বার্তা সম্পাদক, দৈনিক আজকের হবিগঞ্জ।
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্ছ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার : এমপি মজিদ খান

সব কিছুতেই জিন্দাবাদ

আপডেট সময় ০৩:০৫:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০
আশরাফুল ইসলাম কহিনুর : এক সময় পত্রিকায়, কিংবা ফেইসবুকে চোখ রাখতেই যখন দেখতাম কোন সংবাদকর্মী জেলে, সহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, তখন খুব আতকে উঠতাম, হতবাক হতাম, উদ্বিগ্ন হয়ে উঠতাম। কিন্তু এখন আর হইনা। বরং এটাইতো এখন হওয়ার কথা! তাহলে সমস্যাটা কোন জায়গায়? সমস্যাটা হচ্ছে আমরা আমরার মধ্যেই নেই!
আমরা যারা সংবাদপত্রে কিংবা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কাজ করি তারা নিজেদেরকে অনেক বড় সাংবাদিক! অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব মনে করি। অথচ একবারও কি আমরা চিন্তা করে দেখেছি আমাদের অবস্থানটা কোন জায়গায়? যদি দেখতাম তাহলে আরও ভালো থাকতাম।
কেউ কেউ বলবেন, সংবাদ পত্র রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ, সাংবাদিকরা সমাজের আয়না, আরে ভাই সবই ঠিক আছে, কিন্তু এগুলো হচ্ছে কিতাবের কথা। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বড় বড় কর্তা ব্যক্তিরা ডায়েচে দাঁড়িয়ে আমাদের বাহবা দেন! কিন্তু বাস্তবে কি আমরা তাই? এসব প্রশ্নের উত্তর আমরা সংবাদকর্মীরা খুঁজে বেড়াই না।
করোনা ভাইরাস তামাম দুনিয়া জুড়ে এক মহা সঙ্কট তৈরী করেছে। বিচিত্র স্বভাবের বিচিত্র মানুষ আজ গৃহবন্দি। নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই রাষ্টের নির্দেশে মানুষ নিজেদের ঘরে অবস্থান করছেন। ফলে কর্মজীবি মানুষ হয়ে পড়েন কর্মহীন। এতে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারগুলোতে অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরী হয়। সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। রাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, ইমাম, মোয়াজ্জিনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ও দরিদ্র পরিবারগুলোকে প্রণোদনার আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ, বা সমাজের আয়না’রা কি পেলেন? হিসাব মিলান আমাদের মূল্যায়নের জায়গাটা কোথায়? অবস্থানটা কোন জায়গায়?
দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমরা কেউ কেউ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের পকেটে, আবার কেউ কেউ জনপ্রতিনিধিদের পকেটে অবস্থান করি। এটা খারাপ আমি সেটা বলছি না, খারাপ সেটা যখন আমরা ভুলে যাই আমাদের পেশাদারিত্ব। তবে ভুলটা আমাদের তখনই ভাঙ্গে যখন চার দেয়ালের প্রকোষ্টে নিক্ষিপ্ত হই। তখন কেউ পাশে থাকে না। আমাদের চারপাশ পাল্টে যায়। পরিচিত চেহারাগুলো রহস্যময় হয়ে আবির্ভূত হয়। তখন একা একা লড়াই করে ঠিকে থাকা যায় না। একদিন শক্তির কাছে হার মানতেই হয়। তবে আশার কথা হচ্ছে- নির্যাতিত সংবাদকর্মীর সারি দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে, এই সারি‌তে আপনে-আমাকেও একদিন দাঁড়াতে  হতে পারে। সেই পথ আমরাই তৈরী করে দিচ্ছি।
মাঝে মাঝে এক সাংবাদিক বড় ভাইয়ের সাথে যখন ফোনে কথা হয়, তখন তিনি খুব আক্ষেপ করে বলেন- “আমরা এখন সাংবাদিকতা করছি না। রাজা-বাদশাদের আমলে প্রচারের দায়িত্ব পালন করতো ঢুলিরা। আমরা এখন ঢুলির দায়িত্ব পালন করছি।” উনার যুক্তির সাথে  দ্বিমত পোষণ করার উপায় নেই, আমরা নিজেদের পেশাদারিত্ব ছেড়ে দিয়েছি। নিজেদের পেশার সুনাম-ঐতিহ্য নিজেরাই ধ্বংস করছি।
এখন নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ঢুলির দায়িত্ব পালন করব না সাংবাদিকতা করব? যদি ঢুলির দায়িত্ব পালন করতে হয় তাহলে কিসের প্রতিবাদ, সব কিছুতেই জিন্দাবাদ।
লেখক : বার্তা সম্পাদক, দৈনিক আজকের হবিগঞ্জ।