ঢাকা ০৫:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নবীগঞ্জে ইফা কর্তৃক জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা Logo সু-শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে জনসাধারণকে তথ্য জানাতে হবে : ড. আব্দুল হাকিম Logo বানিয়াচং মডেল প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল সম্পন্ন : সভাপতি লিটন, সম্পাদক আব্দাল মিয়া Logo নবীগঞ্জে মোটরসাইকেল চাপায় স্কুল ছাত্র নিহত : মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo আজ হবিগঞ্জ আসছেন কবির বিন আনোয়ার : জেলা আ’লীগ অফিসে উদ্বোধন করবেন স্মার্ট কর্নার Logo উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে আবারও নির্বাচিত করুন : এমপি মজিদ খান Logo ইকরাম বাজারে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ঘর পরিদর্শন করেছেন এমপি মজিদ খান Logo উন্নত স্বাস্থ্য সেবার ব্রত নিয়ে বানিয়াচং গ্যানিংগঞ্জ বাজারে সততা ডায়াগস্টিক সেন্টার উদ্বোধন Logo বানিয়াচংয়ে গ্রাম্য দাঙ্গা রোধে দেশীয় অস্ত্রবাজদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় আনা হবে Logo বানিয়াচংয়ে ইকরাম বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৯টি দোকান পুড়ে ছাঁই : ব্যাপক ক্ষতি

শায়খ আবু নছর কোরাইশী দাখিল মাদ্রাসা ও এর প্রতিষ্ঠাতা মো. আশিকুর রহমান কোরাইশী : প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

  • তরঙ্গ ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৫:১৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০২০
  • ৫২ বার পড়া হয়েছে

শিব্বির আহমদ আরজু : বানিয়াচং তথা হবিগঞ্জের মধ্যে প্রতিষ্ঠার পর থেকে যে ক’টি প্রতিষ্ঠান এর ফলাফল উর্ধ্বগামিতা বহমান আছে এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শায়খ আবু নছর কোরাইশী দাখিল মাদ্রাসা। এ প্রতিষ্ঠানে দু’টি শাখা রয়েছে। একটি হচ্ছে জেনারেল শাখা, অপরটি হিফজ শাখা। দু’টি শাখা-ই ঈর্ষণীয় ফলাফল করে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানের ফলাফল যেমন ঈর্ষণীয়, ঠিক তেমনিভাবে পরিপাটির দিক থেকেও সেরা। মাদ্রাসায় গেলেই চোখে পড়বে পরিপাটির দৃশ্য। প্রতিটি বালুকণা এবং দেয়ালিকা এর সাক্ষি। নিশ্চয় এর পেছনে সুনিপুণ কোন কাগির রয়েছেন। তিনি হচ্ছেন মাদ্রাসার সুপার বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব মাওলানা নজরুল ইসলাম। মূলত এ মানুষটি প্রতিষ্ঠানকে অনন্যস্থানে পৌঁছে দিতে রাত-দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। পাশে রয়েছেন সহ সুপার মাওলানা হামিদুল ইসলাম ও হিফজ বিভাগের শিক্ষক অদম্য মেধাবী হাফেজ সুহাইল আহমদ। শায়খ আবু নছর কোরাইশী দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনায় ৩টি সেক্টরের মধ্যে দারুণ সমন্বয় রয়েছে। (১) মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, পরিচালনা কমিটি এবং শিক্ষক স্টাফের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও বিশ্বাসের পাশাপাশি প্রাণভরে প্রতিষ্ঠানকে ভালোবাসা, (২) মাদ্রাসার সুপারের বলিষ্ট নেতৃত্বে শিক্ষক স্টাফ একীভূতভাবে কাজ করা, (৩) পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে সমস্যাবলিসহ উন্নয়ন পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করা। এ ৩টি সেক্টর অধিকতর কার্যকর বিধায় শায়খ আবু নছর কোরাইশী দাখিল মাদ্রাসা জেনারেল ও হিফজ বিভাগ ক্রমাগত ঈর্ষণীয় ফলাফল করে যাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠাতার পরিচয় : মো. আশিকুর রহমান কোরাইশী বানিয়াচং মিয়াখানীতে (শেখের বাড়ি) ১৯৬২ সালে এক সভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা শেখ মো. রফিক কোরাইশী ও মাতা রহিমা খাতুন চৌধুরী।
শিক্ষাজীবন : ১৯৭৭ সালে বানিয়াচং এর ঐতিহ্যবাহী এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৮২ সালে সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা করেন। ২০১৮ সালে লন্ডনের সান্ডারল্যান্ড ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
কর্মজীবন : ১৯৮৩ সালে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে পেট্রোবাংলাতে যোগদান করেন মো. আশিকুর রহমান কোরাইশী। ২ বছর প্রশিক্ষণের পর সহকারি ডিলিং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পেট্রোবাংলার ( অয়েল এন্ড গ্যাস কর্পোরেশনে) যোগদান করেন এবং ৭ বছর কর্মরত থাকাবস্থায় ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইংল্যান্ডে গমন করেন।
পারিবারিক জীবন : ১৯৯১ সালে সভ্রান্ত এক পরিবারের মহিয়সী নারী রওশনারা কোরাইশী (এমবিএম) এর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি ৪ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক।

 


১ম ছেলে মুশতাকিম কোরাইশী একটি কোম্পানিতে আইটি কন্সালটেন্ট হিসেবে কর্মরত।
২য় ছেলে মুজতাহিদ কোরাইশী এমবিবিএস ডাক্তার, বর্তমানে লন্ডনের একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত। তিনি একজন কোরআনের হাফেজও।
৩য় ছেলে ইয়াছিন কোরাইশী একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে সহকারি অডিট অফিসার হিসাবে কর্মরত।
পাশাপাশি সে একজন কোরআনে হাফেজ ও মদিনা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নের জন্য স্কলারশিপ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী।
৪র্থ মেয়ে সাদিকা কোরাইশী এ বছর কলেজ শিক্ষা সম্পন্ন করে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির জন্য অপেক্ষমান।
৫ম ছেলে ইয়াহিয়া কোরাইশী ৭ বছর বয়সের সর্ব কনিষ্ট ছেলে। সে ২য় শ্রেণিতে পড়ালেখার পাশাপাশি হিফজ বিভাগেও অধ্যয়ন করছে।
মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় তাঁর অবদান : এলাকার ছেলে-মেয়েদেরকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তৎকালিন সময়ে শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা এই জনপদে মিয়াখানী (শেখের বাড়িতে) ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন শায়খ আবু নছর কোরাইশী দাখিল মাদরাসা। প্রতিষ্ঠালগ্নে মাদ্রাসার নতুন ভবন উদ্বোধন করেন হবিগঞ্জ-২ আসনের (বানিয়াচং -আজমিরীগঞ্জের) মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান। শুরুতেই এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়েছিল হিফজখানার মাধ্যমে। বর্তমানে মাদ্রাসার হিফজ বিভাগে আবাসিক বোর্ডিং চালু আছে। যেখানে এতিম শিক্ষার্থীরা ফ্রি- খাওয়া এবং থাকার সুবিধা ভোগ করছেন। এ বছর হিফজ বিভাগে প্রায় ৫০ জন ছাত্র অধ্যয়ন করছে।
পরবর্তীতে ইবতেদায়ি ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা হয় এবং ৩য় পদক্ষেপে দাখিল ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান সম্প্রসারণ করা হয়। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে ১ম শ্রেণি-১০ম শ্রেণি পর্যন্ত সুনামের সাথে পাঠদান কার্যক্রম চলছে।
১ম-৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী এবং পর্যাপ্ত ক্লাসরুম না থাকায় ৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শুধুমাত্র ছাত্রী ভর্তি করা হয়। একাডেমিক বিভাগে অধ্যয়নরত বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৪৫০ জন।
ভবিষ্যতে এ প্রতিষ্ঠানটিকে কামিল স্তরে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছেন প্রতিষ্ঠাতার পরিবার।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয় নির্বাহ করছেন মো. আশিকুর রহমান কোরাইশী ও তাঁর সহধর্মিনী রওশনারা কোরাইশী ও তাঁদের পরিবার।
এ কাজে যুক্ত হয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তাঁদের দেশ-বিদেশের আত্বীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাঙ্খিবৃন্দ।
স্থানীয়ভাবে মাদ্রাসার সার্বিক কাজ আঞ্জাম দেয়া, তত্ত্বাবধান করা ও সম্মুখপানে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে যার অবদান অনন্য তিনি হলেন দাতা সদস্য মো. মুহিবুর রহমান মিঠু এবং প্রবাসী সহযোগিতাকারিদের মধ্যে ইংল্যান্ড প্রবাসী প্রতিষ্ঠাতার ভগ্নি ও ভগ্নিপতিসহ শামীম আরা চৌধুরী অমৃত এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যিনি মাদ্রাসার জায়গা, বিল্ডিং এর একটি রুম প্রদান করেন এবং বিভিন্ন সময়ে আর্থিক সহযোগিতা করে আসছেন।
প্রতিষ্ঠানের সমস্যা : প্রতিবছর ইইসি, জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় ঈর্ষণীয় ফলাফল অর্জনের পরও এ প্রতিষ্ঠানটি পাচ্ছেনা উল্লেখযোগ্য সরকারি কোন সহযোগিতা। মাদ্রাসার জায়গা, একাডেমিক বিল্ডিং ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন এ পর্যন্ত সবকিছুই হয়েছে প্রতিষ্ঠাতা ও তাঁর আত্মীয়-স্বজনদের অনুদানের মাধ্যমে। তবে ২০১৯ সালে এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান মহোদয়ের এক লক্ষ টাকার আর্থিক অনুদানে কিছু মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নতুন এই প্রতিষ্ঠানটির সুপার ও সহ সুপারের ১২/১০ বছরের এমপিওভূক্ত প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা না থাকার অজুহাতে স্বনামধন্য এ মাদ্রাসাকে দেয়া হচ্ছেনা পাঠদান অনুমোদন কিংবা একাডেমিক স্বীকৃতি; যার ফলে কোন বিল্ডিং এবং আর্থিক অনুদানও পাচ্ছেনা এই প্রতিষ্ঠানটি।
এ প্রতিষ্ঠানটি একাডেমিক স্বীকৃতিসহ এমপিওভূক্তি হলে শিক্ষকদের গতি আরও দ্বিগুণ বেড়ে যেত এবং ফলাফলের দিক থেকেও এতদ অঞ্চলের জন্য অনেক গৌরব বয়ে আনত। এ সমস্যা সমাধানে স্থানীয় মানবিক এমপি আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান মহোদয়, উপজেলা চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধিসহ দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছেন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মো. আশিকুর রহমান কোরাইশী।
লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক,‘তরঙ্গ২৪.কম’।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নবীগঞ্জে ইফা কর্তৃক জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা

শায়খ আবু নছর কোরাইশী দাখিল মাদ্রাসা ও এর প্রতিষ্ঠাতা মো. আশিকুর রহমান কোরাইশী : প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

আপডেট সময় ০৫:১৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০২০

শিব্বির আহমদ আরজু : বানিয়াচং তথা হবিগঞ্জের মধ্যে প্রতিষ্ঠার পর থেকে যে ক’টি প্রতিষ্ঠান এর ফলাফল উর্ধ্বগামিতা বহমান আছে এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শায়খ আবু নছর কোরাইশী দাখিল মাদ্রাসা। এ প্রতিষ্ঠানে দু’টি শাখা রয়েছে। একটি হচ্ছে জেনারেল শাখা, অপরটি হিফজ শাখা। দু’টি শাখা-ই ঈর্ষণীয় ফলাফল করে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানের ফলাফল যেমন ঈর্ষণীয়, ঠিক তেমনিভাবে পরিপাটির দিক থেকেও সেরা। মাদ্রাসায় গেলেই চোখে পড়বে পরিপাটির দৃশ্য। প্রতিটি বালুকণা এবং দেয়ালিকা এর সাক্ষি। নিশ্চয় এর পেছনে সুনিপুণ কোন কাগির রয়েছেন। তিনি হচ্ছেন মাদ্রাসার সুপার বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব মাওলানা নজরুল ইসলাম। মূলত এ মানুষটি প্রতিষ্ঠানকে অনন্যস্থানে পৌঁছে দিতে রাত-দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। পাশে রয়েছেন সহ সুপার মাওলানা হামিদুল ইসলাম ও হিফজ বিভাগের শিক্ষক অদম্য মেধাবী হাফেজ সুহাইল আহমদ। শায়খ আবু নছর কোরাইশী দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনায় ৩টি সেক্টরের মধ্যে দারুণ সমন্বয় রয়েছে। (১) মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, পরিচালনা কমিটি এবং শিক্ষক স্টাফের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও বিশ্বাসের পাশাপাশি প্রাণভরে প্রতিষ্ঠানকে ভালোবাসা, (২) মাদ্রাসার সুপারের বলিষ্ট নেতৃত্বে শিক্ষক স্টাফ একীভূতভাবে কাজ করা, (৩) পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে সমস্যাবলিসহ উন্নয়ন পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করা। এ ৩টি সেক্টর অধিকতর কার্যকর বিধায় শায়খ আবু নছর কোরাইশী দাখিল মাদ্রাসা জেনারেল ও হিফজ বিভাগ ক্রমাগত ঈর্ষণীয় ফলাফল করে যাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠাতার পরিচয় : মো. আশিকুর রহমান কোরাইশী বানিয়াচং মিয়াখানীতে (শেখের বাড়ি) ১৯৬২ সালে এক সভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা শেখ মো. রফিক কোরাইশী ও মাতা রহিমা খাতুন চৌধুরী।
শিক্ষাজীবন : ১৯৭৭ সালে বানিয়াচং এর ঐতিহ্যবাহী এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৮২ সালে সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা করেন। ২০১৮ সালে লন্ডনের সান্ডারল্যান্ড ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
কর্মজীবন : ১৯৮৩ সালে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে পেট্রোবাংলাতে যোগদান করেন মো. আশিকুর রহমান কোরাইশী। ২ বছর প্রশিক্ষণের পর সহকারি ডিলিং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পেট্রোবাংলার ( অয়েল এন্ড গ্যাস কর্পোরেশনে) যোগদান করেন এবং ৭ বছর কর্মরত থাকাবস্থায় ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইংল্যান্ডে গমন করেন।
পারিবারিক জীবন : ১৯৯১ সালে সভ্রান্ত এক পরিবারের মহিয়সী নারী রওশনারা কোরাইশী (এমবিএম) এর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি ৪ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক।

 


১ম ছেলে মুশতাকিম কোরাইশী একটি কোম্পানিতে আইটি কন্সালটেন্ট হিসেবে কর্মরত।
২য় ছেলে মুজতাহিদ কোরাইশী এমবিবিএস ডাক্তার, বর্তমানে লন্ডনের একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত। তিনি একজন কোরআনের হাফেজও।
৩য় ছেলে ইয়াছিন কোরাইশী একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে সহকারি অডিট অফিসার হিসাবে কর্মরত।
পাশাপাশি সে একজন কোরআনে হাফেজ ও মদিনা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নের জন্য স্কলারশিপ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী।
৪র্থ মেয়ে সাদিকা কোরাইশী এ বছর কলেজ শিক্ষা সম্পন্ন করে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির জন্য অপেক্ষমান।
৫ম ছেলে ইয়াহিয়া কোরাইশী ৭ বছর বয়সের সর্ব কনিষ্ট ছেলে। সে ২য় শ্রেণিতে পড়ালেখার পাশাপাশি হিফজ বিভাগেও অধ্যয়ন করছে।
মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় তাঁর অবদান : এলাকার ছেলে-মেয়েদেরকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তৎকালিন সময়ে শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা এই জনপদে মিয়াখানী (শেখের বাড়িতে) ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন শায়খ আবু নছর কোরাইশী দাখিল মাদরাসা। প্রতিষ্ঠালগ্নে মাদ্রাসার নতুন ভবন উদ্বোধন করেন হবিগঞ্জ-২ আসনের (বানিয়াচং -আজমিরীগঞ্জের) মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান। শুরুতেই এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়েছিল হিফজখানার মাধ্যমে। বর্তমানে মাদ্রাসার হিফজ বিভাগে আবাসিক বোর্ডিং চালু আছে। যেখানে এতিম শিক্ষার্থীরা ফ্রি- খাওয়া এবং থাকার সুবিধা ভোগ করছেন। এ বছর হিফজ বিভাগে প্রায় ৫০ জন ছাত্র অধ্যয়ন করছে।
পরবর্তীতে ইবতেদায়ি ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা হয় এবং ৩য় পদক্ষেপে দাখিল ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান সম্প্রসারণ করা হয়। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে ১ম শ্রেণি-১০ম শ্রেণি পর্যন্ত সুনামের সাথে পাঠদান কার্যক্রম চলছে।
১ম-৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী এবং পর্যাপ্ত ক্লাসরুম না থাকায় ৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শুধুমাত্র ছাত্রী ভর্তি করা হয়। একাডেমিক বিভাগে অধ্যয়নরত বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৪৫০ জন।
ভবিষ্যতে এ প্রতিষ্ঠানটিকে কামিল স্তরে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছেন প্রতিষ্ঠাতার পরিবার।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয় নির্বাহ করছেন মো. আশিকুর রহমান কোরাইশী ও তাঁর সহধর্মিনী রওশনারা কোরাইশী ও তাঁদের পরিবার।
এ কাজে যুক্ত হয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তাঁদের দেশ-বিদেশের আত্বীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাঙ্খিবৃন্দ।
স্থানীয়ভাবে মাদ্রাসার সার্বিক কাজ আঞ্জাম দেয়া, তত্ত্বাবধান করা ও সম্মুখপানে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে যার অবদান অনন্য তিনি হলেন দাতা সদস্য মো. মুহিবুর রহমান মিঠু এবং প্রবাসী সহযোগিতাকারিদের মধ্যে ইংল্যান্ড প্রবাসী প্রতিষ্ঠাতার ভগ্নি ও ভগ্নিপতিসহ শামীম আরা চৌধুরী অমৃত এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যিনি মাদ্রাসার জায়গা, বিল্ডিং এর একটি রুম প্রদান করেন এবং বিভিন্ন সময়ে আর্থিক সহযোগিতা করে আসছেন।
প্রতিষ্ঠানের সমস্যা : প্রতিবছর ইইসি, জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় ঈর্ষণীয় ফলাফল অর্জনের পরও এ প্রতিষ্ঠানটি পাচ্ছেনা উল্লেখযোগ্য সরকারি কোন সহযোগিতা। মাদ্রাসার জায়গা, একাডেমিক বিল্ডিং ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন এ পর্যন্ত সবকিছুই হয়েছে প্রতিষ্ঠাতা ও তাঁর আত্মীয়-স্বজনদের অনুদানের মাধ্যমে। তবে ২০১৯ সালে এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান মহোদয়ের এক লক্ষ টাকার আর্থিক অনুদানে কিছু মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নতুন এই প্রতিষ্ঠানটির সুপার ও সহ সুপারের ১২/১০ বছরের এমপিওভূক্ত প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা না থাকার অজুহাতে স্বনামধন্য এ মাদ্রাসাকে দেয়া হচ্ছেনা পাঠদান অনুমোদন কিংবা একাডেমিক স্বীকৃতি; যার ফলে কোন বিল্ডিং এবং আর্থিক অনুদানও পাচ্ছেনা এই প্রতিষ্ঠানটি।
এ প্রতিষ্ঠানটি একাডেমিক স্বীকৃতিসহ এমপিওভূক্তি হলে শিক্ষকদের গতি আরও দ্বিগুণ বেড়ে যেত এবং ফলাফলের দিক থেকেও এতদ অঞ্চলের জন্য অনেক গৌরব বয়ে আনত। এ সমস্যা সমাধানে স্থানীয় মানবিক এমপি আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান মহোদয়, উপজেলা চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধিসহ দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছেন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মো. আশিকুর রহমান কোরাইশী।
লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক,‘তরঙ্গ২৪.কম’।