কাজী মাহমুদুল হক সুজন : শপথের ১মাসে মাদকবিরোধী চলমান অভিযানে ১৪ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৫০ টাকার মাদক উদ্ধার করেছে চুনারুঘাট থানা পুলিশ। আটক করা হয়েছে সাড়ে ৪ মণ গাজা, ৯১০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট, কয়েক বোতল ভারতীয় মদসহ বিভিন্ন মাদক। চোরা কারবারীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ২৩ টি। গ্রেফতার করা হয়েছে ৪৬ মাদক চোরাকারবারীকে। গত সোমবার আমাদের এ প্রতিনিধিকে সাক্ষাতকারে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ নাজমুল হক এসব তথ্য জানান। পুলিশ জানায়, গত ১৬ জুলাই রাতে লেনদেনকালে বিড়ি বিক্রেতা থেকে কোটিপতি বনে যাওয়া উপজেলার সুন্দরপুর কড়ইটিলা গ্রামের কুখ্যাত মাদক চোরাকারবারি গাঞ্জা চাচা নামে খ্যাত হাছন আলীকে গ্রেফতার করেন চুনারুঘাট থানার এসআই শেখ আলী আজহার চঞ্চল এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ।
এরপর তার নেতৃত্বে মাদকসহ গ্রেফতার হয় চুনারুঘাট উপজেলার বনগাও গ্রামের কুখ্যাত মাদক চোরাকারবারি ও বহু অপকর্মের হোতা নিষ্ঠুর খলিল, চন্দনা গ্রামের মাদক সম্রাট মুকিত, মরতুজ আলী, গনকিরপাড় গ্রামের রাজু, বাঘা লিটন, সাতছড়ির কৃষাণ গোয়ালা। একই থানার এসআই শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে গ্রেফতার হয় উপজেলার ছয়শ্রী গ্রামের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল হক। এসআই ভূপেন্দ্র বর্মন এর নেতৃত্বে গ্রেফতার হয় দৌলতখান আবাদ গ্রামের নুর হোসেন। এসআই সম্রাট আহমেদ এর নেতৃত্বে গ্রেফতার হয় উপজেলার হাপ্টার হাওর গ্রামের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী জাহির মিয়া। এসআই রাজন দেব এর নেতৃত্বে গ্রেফতার হয় উপজেলার নয়ানী গ্রামের ইয়াবা ব্যবসায়ী ট্যাবলেট জুয়েল। উল্লেখিত ব্যবসায়ীরা উপজেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অন্যতম।
তাদের একেকজন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতারের পর এলাকার সচেতন মহলে স্বস্তি ফিরে আসে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওসি শেখ নাজমুল হক ও তাঁর ফোর্সদের সাধুবাদ জানানো হয়। যদিও এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বেশ কয়েকজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তবে তাদেরও গ্রেপতার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে টিম চুনারুঘাট। এ অভিযানে চুনারুঘাট ছাড়াও মাদক চোরাচালানকালে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ নাজমুল হক বলেন, চুনারুঘাটকে মাদকমুক্ত করতে তিনি তাঁর ফোর্সদের নিয়ে রাতদিন অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।
যারা ইতিমধ্যেই মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে তাদেরকে তিনি সাধুবাদ জানান। যারা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে তাদেরকেও তিনি সাধুবাদ জানান। কিন্তু যারা এখনো মাদক ব্যবসায় সক্রিয় থাকতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন এর চেষ্টা করছে তাদেরকে কোন অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি মাদকের ব্যাপারে কাউকে কোন অনুরোধ না করতে বলে জানান। যারা তদবির করবে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
ওসি (তদন্ত)চম্পক ধাম বলেন, মাদক বিরোধী অভিযানের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে সভা ও গণজমায়েতের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে জনতার মাধ্যমেও মাদক চালান আটক করতে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।অনেক স্তানে জনতাও মাদকের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জুলাই রাতে চুনারুঘাট থানা পুলিশ ওসির নেতৃত্বে মাদকের বিরুদ্ধে শপথ গ্রহন করে টিম চুনারুঘাট নামে একটি টিম গঠন করে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
উল্লেখ্য, চুনারুঘাট থানার ওসি (তদন্ত) চম্পক ধামের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন তরঙ্গ টুয়েন্টিফোর ডট কম এর বিশেষ প্রতিনিধি কাজী মাহমুদুল হক সুজন।