তরঙ্গ ডেস্ক : চলতি বছর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রেকর্ড ২৭৪ সাংবাদিককে জেলে যেতে হয়েছে। করোনা মহামারী নিয়ে প্রকৃত তথ্য তুলে আনতে গিয়ে বা সরকারের প্রতি গণঅসন্তোষের খবর প্রকাশ করার কারণে তারা প্রশাসনের বিরাগভাজন হয়েছেন।গত মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কভিত্তিক কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংগঠনটি নব্বই দশকের শুরু থেকে বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ করে আসছে। সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত এ বছরই সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক জেলে গেছেন।
সিপিজে বলছে, ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তত ২৭৪ জন সাংবাদিককে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২৫০ জন। করোনা মহামারীর মধ্যে অনেক দেশের সরকার সাংবাদিকদের কারাগারে ঢুকিয়ে খবর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এতে অন্তত দুজন সাংবাদিক পুলিশি হেফাজতে থাকার সময় করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন।
বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক উত্তেজনা নিয়ে খবর প্রকাশ করতে গিয়ে অনেক সাংবাদিক এ বছর গ্রেপ্তার হয়েছেন। চীন, তুরস্ক, মিসর ও সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিকের জেল হয়েছে।
এক বিবৃতিতে সিপিজের নির্বাহী পরিচালক জোয়েল সিমন বলেন, ‘একটি বৈশ্বিক মহামারী চলাকালে রেকর্ড সংখ্যায় সাংবাদিককে জেলে ঢোকানোর ঘটনা খুবই দুঃখজনক এবং ভয়াবহ আতঙ্কের বিষয়।’
প্রতিবেদনে বিশ্বনেতাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার ইচ্ছার অভাবকে সাংবাদিকের কারাবন্দি হওয়ার পেছনে দায়ী করা হয়েছে। বিশেষ করে সংবাদমাধ্যমের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক মনোভাবের কারণে এমনটা হয়েছে বলে দাবি করেছে সিপিজে।
এ বছর বিশ্বে ৩৪ সাংবাদিককে ‘মিথ্যা খবর’ প্রকাশের অভিযোগে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৩১ জন। যুক্তরাষ্ট্রে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো সাংবাদিক কারাগারে ছিলেন না। যদিও এ বছর দেশটিতে ১১০ সাংবাদিক গ্রেপ্তার হন। এদের বেশিরভাগই পুলিশের নৃশংসতার বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভের খবর সংগ্রহ ও প্রকাশ করার কারণে গ্রেপ্তার হন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ বছর কারাগারে যাওয়া সাংবাদিকদের দুই-তৃতীয়াংশের বিরুদ্ধেই রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড বা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার ‘অপরাধে’ তাদের অভিযুক্ত করা হয় এবং জেলে ঢোকানো হয়। সূত্র সূত্র : জাতীয় দৈনিক দেশ রূপান্তর