মোক্তাদির হাসান সেবুল, বানিয়াচংঃ সিলেটে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি রবিউল হাসানকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়েছে গত রবিবার রাতে। রবিউলকে গ্রেফতার অভিযানে অংশ নেন হবিগঞ্জের বানিয়াচং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. সেলিমের নেতৃত্বে একদল চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. সেলিম জানান, ধর্ষক রবিউলকে গ্রেফতার করতে ওইদিন দুপুর ২ টা থেকে পুলিশের তৎপরতা ছিল। কিছু বর্ণনার সূত্র ধরে কাজটি করা হয়েছে। তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্যা স্যারের দিকনির্দেশনায় তাকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, কিছু গোয়েন্দা তথ্যের সূত্র ধরে আমরা জানতে পারলাম রবিউল নবীগঞ্জের কোথাও অবস্থান করছে। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান, গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার -ইনচার্জ (ওসি) মানিকুল ইসলাম, পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল, উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজাদসহ হবিগঞ্জ নবীগঞ্জের একদল পুলিশসহ অভিযান শুরু করি। রবিউল ইসলামকে গ্রেফতারের বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সেলিম জানান, রবিবার রাত ৯ টার দিকে আমরা রবিউলের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হই। এসময় তিনি নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্য সময় গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন বলে আমরা নিশ্চিত হই। তিনি জানান, রবিউলের অবস্থান নিশ্চিত করে ওই বাড়িটিকে ঘিরে ফেলে পুলিশ। পরে বাড়িতে ঢুকার সময় দেখা গেল রবিউল ঘর থেকে বের হয়ে আসছে। পুলিশের অবস্থান টের পেয়ে রবিউল আবারও দ্রুত ঘরের ভিতরে চলে যায়। সাথে সাথে ঘরের ভিতরে ঢুকে তাকে আটক করা হয়। পরে ওইদিন রাতেই তাকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গ্রেফতারকৃত রবিউল সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল গ্রামের বাসিন্দা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. সেলিম বলেন, “বাংলাদেশ পুলিশ সবসময় আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধীদের সাজার ব্যবস্থা করে থাকে। ব্যতিক্রম ঘটেনি এমসি কলেজের গণ ধর্ষণের ঘটনার ক্ষেত্রেও। পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় আমার নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর, ওসি ডিবি মানিকুল ইসলাম, এস আই আজাদ ও মোজাম্মেল সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের টানা ৮ ঘন্টার সফল অভিযানে গণ ধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি মোঃ রবিউল হাসানকে নবীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।” উল্লেখ্য, গত শুক্রবার এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দুজন। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদি হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ছাত্রলীগের ৬ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫)।