শায়খ মাওলানা কামাল উদ্দীন খান আল-হুসাইনী :
কাদিয়ানী ফেৎনা ও লা-মাযহাবী ফেৎনা শুধুমাত্র কোন বাড়ি, মহল্লা ও গ্রামের সমস্যা নয় ; বরং আন্তর্জাতিক সমস্যা। গা বাঁচানোর জন্য আমরা যারা বলে থাকি যে এগুলো তো ওমুক বাড়ি বা ওমুক মহল্লার সমস্যা, তাদের সমস্যা তারাই দূর করুক ; আমরা সেদিন হারে হারে টের পাব যেদিন ওরা আমাদের গলা টিপে ধরবে যে, এগুলো কার সমস্যা ? তাই সেই দিনের অপেক্ষায় না থেকে এখনই ওদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সোচ্ছার ও সজাগ ভূমিকা নিতে হবে।
ইতিপূর্বে আমরা দেখেছি যে, শরীয়ত বিরোধী কোন কাজ কোথাও সংঘটিত হতে দেখলে আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করতেন। আর তখন সমাজে পাপের কাজ সংঘটিত হতে সুযোগ পেত না। কিন্তু, ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, আলেম সমাজের বিভক্তি ও অনৈক্যের কারণে পাপাচারে বাধাদান পূর্বের তুলনায় অনেক কম হওয়ায় সমাজে পাপের কাজ সংঘটিত হচ্ছে প্রকাশ্যে ও অহরহ! ঘটছে সমাজের চারিত্রিক অবক্ষয়!
গান-বাজনা, অশ্লীলতা ও বেপর্দার সয়লাব আজ সমাজে! কিন্তু, কেন ? আমরা কি পারি না আমাদের আগেকার মুরব্বি আলেমদের মত ব্যক্তি স্বার্থকে ভুলে গিয়ে কাধে কাঁদ মিলিয়ে এক কাতারে দাঁড়িয়ে ইসলামের নিরলস খেদমত করতে ? অবশ্যই পারব ইনশা আল্লাহ্ যদি নিজেদের আমিত্বকে মিটিয়ে অন্তরে এখলাস ধারণ করতে পারি।
(এতটুকু লিখে ছিলাম কাগাপাশার চলমান আন্দোলনের আগে। হয় তো আল্লাহ আমার মনের বেদনা মাখা আকাঙ্খাটি কবূল করেছেন! যার নমুনা) আজ ২ দিন ব্যাপী বানিয়াচঙ্গের আলেম সমাজ মাজার পুঁজা, মদ ও জোয়ার বিরুদ্ধে কাগাপাশা হাইস্কুল মাঠে পুরো রাত জেগে অবস্থান করছেন। এ প্রশংসনীয় উদ্যোগটি আমাকে শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে!
তখন আমরা গোটা আলেম সমাজ ও সাধারণ মুসলমানরা বীর-সাহসী মর্দে মুজাহিদ মাওলানা আব্দুল মতীন (রহ’ র নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গান-বাজনা, উরস, মদ ও জোয়াসহ যাবতীয় ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতাম। আজ যেন সেই দিন আবারও ফিরে এসেছে! আল্লাহ্ আমাদেরকে আজীবন এভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে ইসলামের খেদমত করার তাওফীক দান করুন! আমীন!
লেখক: শিক্ষাসচিব: মাদরাসাতুল হারামাইন খতীব: ৩নং রাজবাড়ী জামে মসজিদ, বানিয়াচং, হবিগঞ্জ।