তরঙ্গ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব ছাড়ার আগে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার প্রশাসন যা যা করতে এসেছিল তার সবই করেছে।
“যা করতে এসেছিলাম, করেছি। আরও অনেক কিছুই করেছি,” ইউটিউবে পোস্ট করা এক ভিডিওতে ট্রাম্প এ কথা বলেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
রিপাবলিবান এ প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, তিনি বেছে নিয়েছিলেন ‘কঠিন লড়াই, সবচেয়ে শক্ত যুদ্ধ’।
“কেননা এজন্যই আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেছিলেন।”
দায়িত্ব ছাড়ার মুহূর্ত ঘনিয়ে এলেও ট্রাম্প এখন পর্যন্ত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনের কাছে হার পুরোপুরিভাবে মেনে নিতে পারেননি, বলেছে বিবিসি।
বাইডেন বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন।
ট্রাম্পের ঝঞ্জামুখর মেয়াদের শেষ দুই সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল ক্যাপিটল হিলের রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা; নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল উল্টে দিতে হাজার হাজার ট্রাম্প সমর্থকের কংগ্রেস ভবনে ঢুকে পড়ার মধ্য দিয়ে যার সূত্রপাত হয়েছিল। ৬ জানুয়ারির ওই দাঙ্গায় এক পুলিশ সদস্যসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়।
“যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমরা যা যা লালন করি, রাজনৈতিক সহিংসতা তার সবকিছুর উপর আঘাত। এটা কোনোভাবেই বরদাশত করা যাবে না,” ভিডিওতে ট্রাম্পকে এমনটাই বলতে শোনা গেছে।
বিদায়ী এ ভাষণে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বুধবার দায়িত্ব নিতে যাওয়া নতুন প্রশাসনকে শুভেচ্ছা জানালেও তার উত্তরসূরীর নাম নেননি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
চার বছর আগে হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসা ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুইবার অভিশংসিত হয়েছেন। এর মধ্যে দ্বিতীয় দফা অভিশংসিত হয়েছেন কয়েকদিন আগে, ‘বিদ্রোহে উসকানি’ দেওয়ার অভিযোগে।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও কংগ্রেসের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ২০১৯ সালে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ তাকে অভিশংসিত করলেও রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সেনেট তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল।
এবার তার মেয়াদ শেষের পর অভিশংসন নিয়ে উচ্চকক্ষে বিচার বসবে। তাতে দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্প আর কখনও প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়াতে পারবেন না বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো।
দেশটিতে গত কয়েক মাস ধরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ বেশি প্রাধান্য পেলেও এর উপর ছায়া ফেলছে করোনাভাইরাসে ৪ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু। দেশটির প্রায় প্রায় আড়াই কোটি মানুষ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্তও হয়েছেন।
ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প তার প্রশাসনের অর্থনৈতিক অর্জনের প্রশংসাও করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন শেয়ার বাজারের পরিস্থিতি বেশ ভালো হলেও অর্থনীতির অন্যান্য অংশকে নানান প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। অসংখ্য মানুষ চাকরি হারাচ্ছে, খুচরা বিক্রি কমে গেছে, সংখ্যা বাড়ছে বেকারভাতার দাবি জানানো নাগরিকের।
“ডান না বাম তা আমাদের এজেন্ডা ছিল না, রিপাবলিকান না ডেমোক্র্যাট, তাও ছিল না। আমাদের এজেন্ডা ছিল জাতির ভালো করা, সমগ্র জাতির,” নিজের প্রশাসনের ভূমিকা প্রসঙ্গে এমনটাই বলেন ট্রাম্প।
ক্ষমতা ছাড়ার সময় রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্টের ‘অ্যাপ্রুভাল রেটিং’ ৩৪ শতাংশে নেমে এসেছে; যুক্তরাষ্ট্রে আর কোনো বিদায়ী প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায়নি, জানিয়েছে বিবিসি।
সূত্র : বিডিনিউজ২৪.কম