ইমদাদুল হোসেন খান, বানিয়াচং থেকে : বানিয়াচং উপজেলা সদরের চারটি ইউনিয়ন তথা পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচংয়ের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা অত্যন্ত প্রাচীন। সামাজিক সম্প্রীতি ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এই সামাজিক অনুশাসন ব্যবস্থার রয়েছে শত শত বছরের ইতিবাচক ইতিহাস-ঐতিহ্য। মহল্লা, ছান্দ (কয়েকটি মহল্লা নিয়ে ছান্দ) এবং দেশ (মহাগ্রাম বানিয়াচংয়ের সকল ছান্দের সমন্বয়ে দেশ) এই ছিল পঞ্চায়েত কাঠামো। মহল্লার সামাজিক নেতাকে মহল্লার সর্দার, ছান্দের সামাজিক নেতাকে ছান্দ সর্দার এবং দেশের সামাজিক নেতাকে দেশের সর্দার আখ্যায়িত করা হয়। প্রায় দুই যুগ ধরে দেশের সর্দার নির্বাচন না হওয়ায় দেশের পঞ্চায়েত বা বিচার/শালিস যখন যে ইউনিয়নে হয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানই এতে সভাপতিত্ব করেন।
এছাড়া ছান্দের সভায় ছান্দ সর্দার এবং মহল্লার সভায় মহল্লার সর্দার সভাপতিত্ব করেন। হাল আমলে কোন কোন ছান্দ ও মহল্লার সর্দার পদে পেতে একশ্রেণীর প্রভাবশালীদের গ্রুপিং, লবিং, দাঙ্গা-হাঙ্গামার ফলে বানিয়াচংয়ের এই পঞ্চায়েত প্রথার গায়ে কলংকের কালিমা লাগলেও এখনো অনেক ছান্দের জনগণ অতীতের সুষ্ঠু ঐতিহ্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। তন্মধ্যে একটি নন্দীপাড়া সাত মহল্লা ছান্দ। ১৮ মার্চ ২০২১ খিস্টাব্দ তারিখে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আয়-ব্যয়ের হিসাব শেষে শত শত মানুষের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে এই ছান্দের কমিটি গঠন করা হয়েছে। হবিগঞ্জ জেলা ও বানিয়াচং উপজেলার বিশিষ্টজনেরা কমিটির বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।
কণ্ঠভোটে ছান্দের সর্দার বা সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর হোসেন মাস্টার। দু’জন সহকারী ছান্দ সর্দার বা সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ কাজী মুফতি আতাউর রহমান ও বানিয়াচং উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মকছুদুজ্জামান খান। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি শফিউল আলম খান মুছা। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা ও জনাব আলী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি শেখ শাহনেওয়াজ ফুল মিয়া এবং কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন হাজী আশিক বক্স।