আব্দাল মিয়া, বানিয়াচং থেকে : হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ, তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মাঘের শুরুতেই হঠাৎ করে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশায় উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ছিন্নমূল,অসহায়-হতদরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ চরমে। দিনের বেলায় প্রায় এক তৃতীয়াংশ সময় ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে সূর্য। মাঝে মধ্যে সূর্যের খানিক আলোর দেখা মিললেও তা নিরুত্তাপ। তীব্র শীতের কারণে অসহায় দরিদ্র, দিনমজুর কর্মজীবী মানুষজন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্মে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। প্রচণ্ড শীতের কারণে সন্ধ্যার পরপরই রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার জনশূন্য হয়ে পড়ছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হতে চাচ্ছে না। রাতে বৃষ্টির মতো পড়ছে ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। অনেক জায়গায় দিন- দুপুর পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। সরজমিন পরিদর্শনে এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার ফলে ঠান্ডাজনিত নানা রোগ সর্দি, কাশি, জ্বর,ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। এসব রোগীর মধ্যে শিশু ও বয়ঃবৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুও তীব্র শীতে জুবুথুবু হয়ে পড়েছে। কৃষকরা তাদের গবাদিপশুগুলোকে চটের বস্তা পড়িয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। শীত মৌসুমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহার (শীতবস্ত্র ) বিতরণ চলমান থাকায় শীত নিবারণে ভূমিকা রাখছে। তবে আরও প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

কৃষক মোঃ আঃ হাই বলেন, জমিতে চলতি মৌসুমে বোরো ধান আবাদ শুরু হয়েছে। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা থাকায় গত দুদিন ধরে কাজ করতে পারছি না। সঠিকভাবে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিক পাওয়া গেলেও মজুরি বেশি দিয়ে কাজ করাতে হয়। ধান আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
অটোরিকশাচালক মোঃ কাছা মিয়া বলেন, প্রতিদিন রাত ১১-১২টা পযর্ন্ত রিকশা চালাই। কিন্ত গত কয়েকদিন ধরে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা থাকায় রাস্তা-ঘাট ও বাজারগুলোতে জনশূন্য হওয়ার কারণে চলাচলে যাত্রীও নেই।তাই সন্ধ্যার পর বাসায় চলে যাই।
সিএনজি চালক মুজিবুর রহমান বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে হেড লাইট জ্বালিয়েও স্পষ্ট রাস্তা-ঘাট দেখা যায় না। এ ঘন কুয়াশার মধ্যে চুরি-ডাকাতি ও দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। গাড়ির ড্রাইভাররা গাড়ি চালাতে ভয় করে। পাশাপাশি যাত্রীদেরও মনে ভয় থাকে কখন জানি কি হয়?
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচও শামীমা আক্তার তরঙ্গ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, প্রতিদিনি আমাদের হাসপাতালে আউটডোর-ইনডোরে প্রায় ৫/৬ শতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। যে সকল রোগীরা হাসপাতালে আসছেন তাদেরকে যথাযথভাবে ঔষধ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। চিকিৎসা প্রদানে আমাদের চিকিৎিসকসহ সকল স্টাফ অত্যন্ত আন্তরিক।