বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার ৫/৬ নং ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসের তহশিলদার মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে ঘুষ বাণিজ্য ও দুর্নীতির দায়ে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। সোমবার (২০ নভেম্বর) বিকাল ৩ টায় উক্ত আদেশ দেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ। বিষয়টি নিশ্চত করেছেন বানিয়াচংয়ের সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মোঃ সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, তহশিলদার রেজাউল করিমসহ আরও ২ জন স্টাফকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, তহশিলদার রেজাউল করিমের ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে সোমবার ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গত ১৯ নভেম্বর ২০২৩ হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগে উপজেলা সদর কামালখানী গ্রামের মোঃ আব্দুল তহিদ মিয়ার বিধবা মেয়ে মাসকুদা বেগম জানান, তার ভোগদখলে থাকা স্বামীর নামে সম্পত্তি গ্রাস করতে বিরোধীরা ১৪৪ ধারা চেয়ে আদালতে মামলা দিলে তহশিলদার রেজাউল করিম তদন্তভার পান। এরপর গত ১ মাস আগে ওই বিধবাকে অফিসে নিয়ে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন, অন্যথায় রিপোর্ট নারীর বিরুদ্ধে দেবেন বলে হুমকি দেন। অসহায় নারী নিরুপায় হয়ে তহশিলদার রেজাউলকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দেন। কিন্ত টাকা কম দেওয়ায় নারীর রিপোর্ট দিচ্ছেন না তহশিলদার রেজাউল।
পুর্ব তোপখানা গ্রামের কিম্মত আলী জানান, কিছুদিন পূর্বে তিনি তার ক্রয়কৃত জমি নামজারী করতে গেলে তহশিলদার রেজাউল তার কাছে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। পরে নিরুপায় হয়ে তিনি তাকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে নামজারী করান। এ বিষয়ে জানতে তহশিলদার রেজাউলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সেবা প্রত্যাশী আমার একজন ঘনিষ্টজনের আত্মীয় বলে ১০ হাজার টাকা রেখেছি, অন্যতায় আমি ১৫ হাজার টাকা ছাড়া নামজারী করি না (সরকারী বিধি অনুযায়ী নামজারি ফি ১১শত ৫০ টাকা)। উল্লেখ্য তহশিলদারের ঘুষ নেওয়ার অডিও রেকর্ড প্রতিনিধির কাছে সংরক্ষিত আছে।
অপরদিকে ছিলাপাঞ্জা গ্রামের ইসলাম উদ্দিন জাতুকর্ণ পাড়া মৌজার আর এস দাগ নং ৩৪৮ ও ৩৫৩ বাড়ী ও ডুবা, কৃষি রকম ভ‚মির খাজনা পরিশোধ করতে গেলে ১৯৭৯ বাংলা থেকে ১৪৩০ বাংলা পর্যন্ত ৪৫ বছরে কর আসে প্রায় ২০ হাজার টাকা। কিন্ত ঘুষের বিনিময়ে ১৪২৮ থেকে ১৪৩০ পর্যন্ত ফরম নং ১০৭৭ মোতাবেক মাত্র ৩ বছরের খাজনার রসিদে মাত্র ৫৫৫ টাকা আদায় করেন। ফলে সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব গচ্ছা গেছে। এরকমভাবে খাজনা দিতে আসা লোকজনের কাছ থেকে ঘুষের বিনিময়ে নির্ধারিত হালসন অনুযায়ী কর না নিয়ে কম মেয়াদে খাজনা নিয়ে নিজের পকেট ভারী করে সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছিলেন।