ঢাকা ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo বানিয়াচং ইসলাহুল উম্মাহ পরিষদের উদ্যোগে মেধাবী ও কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ Logo হবিগঞ্জ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেন এমপি মজিদ খান Logo বানিয়াচং উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা Logo নৌকা মার্কার সমর্থনে বানিয়াচং দক্ষিণ যাত্রাপাশা বনমুথুরা ভূমিহীন নারী-পুরুষের মিছিল Logo বানিয়াচংয়ে সরকারি প্রণোদনার ৭ হাজার ১শ’ কৃষককে সার-বীজ প্রদান Logo বানিয়াচংয়ে ফারুক চৌধুরী মিতুর মৃত্যুতে আলহাজ্ব রেজাউল মোহিত খানের শোক Logo বর্ণাঢ্য আয়োজনে আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল কোরআন মাদ্রাসার বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo এমপি আব্দুল মজিদ খানকে দলীয় নমিনেশন দেওয়ার দাবীতে বানিয়াচং ২নং ইউনিয়ন আ’লীগের সভা Logo বানিয়াচং ৫/৬নং ভূমি অফিসের তহশিলদার রেজাউল করিম স্ট্যান্ড রিলিজ Logo রাত পোহালেই বানিয়াচং আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল কোরআন মাদ্রাসার বার্ষিক মহাসম্মেলন-২০২৩

বানিয়াচংয়ে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ফি নেওয়ার অভিযোগ

মোঃ আব্দাল মিয়া : হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে নতুন কারিকুলামে বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, শিখন সামগ্রীর মাধ্যমে শিখন এবং মূল্যায়ন কার্যক্রম চালাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার ফি আদায় করার নির্দেশনা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে না থাকলেও লোকনাথ রমন বিহারি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বানিয়াচং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ডাঃ ইলিয়াস একাডেমি, মেধা বিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়সহ উপজেলার প্রায় সকল বিদ্যালয়সমূহে ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষার ফি বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা করে ফি নেয়া হচ্ছে তাও কোন রশিদ ছাড়া।

পরীক্ষার ফি না দিলে শিক্ষার্থীদের নানাভাবে ভয়ভীতিও প্রদর্শন করা হয়। অভিভাবকরা আরও জানান, প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়িতে এসাইনমেন্ট দিলে শিক্ষার্থীরা মোবাইলের ইউটিউব থেকে দেখে খাতায় লিখে নিয়ে শিক্ষকদের দেখাতে হয়। আগের চেয়ে এখন ছেলে মেয়েদের কাগজ কলমসহ বিভিন্ন উপকরণ কিনে দিতে হয়। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অভিভাবকদের। সোমবার (১১নভেম্বর) সরেজমিনে গেলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির পরীক্ষার ন্যায় ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৩৫০টাকা করে ফি আদায় করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের পরিবারের তেমন কোন আয় রোজগারী নেই।

অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ। পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি তা দিতে পারছি না। এ বিষয়ে বানিয়াচং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক পারভিন আক্তার জানান, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিতে অনেক টাকার কাগজ লাগে। ফি না নিলে এত টাকা পাব কোথায়? সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩৫০ টাকা করে ফি আদায় করেছি। মেধা বিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ জানান, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি না নিয়ে চলার কোন উপায় নেই। কারণ তাদের পরীক্ষা নেওয়া অনেক ব্যয়বহুল। সরকারি নির্দেশনায় ফি নেওয়া বা না নেওয়ার স্পষ্ট কোন উল্লেখ নেই।

লোকনাথ রমন বিহারি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন জানান, বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিতে কাগজ, প্রশ্নপত্র ছাপানোসহ বিভিন্ন উপকরণের খরচ হিসেবে আমরা ফি বাবদ ষান্মাসিক ও বার্ষিক মূল্যায়নের ফি ৩০০ টাকা করে সরকারি নির্দেশনা অনুসারে আদায় করেছি। বানিয়াচং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুন মিয়া জানান, সরকারি লিখিত নির্দেশনা অনুসারে মূল্যায়ন পরীক্ষার ফি প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০০ টাকা আদায় করেছি। তিনি আরও বলেন, জেলার বিদ্যালয়গুলো থেকে আমরা অনেক কম ফি নিয়েছি। ডাঃ ইলিয়াছ একাডেমি এর প্রধান শিক্ষক মোঃ হেমায়েত আলী খান জানান, সরকারি লিখিত নির্দেশনা অনুসারে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির মূল্যায়নে ৩০০ টাকা করে প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শামছুল হক জানান, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য ফি নেওয়ার কোন নির্দেশনা এখন পর্যন্ত নেই। পরীক্ষার নির্দেশনাগুলো প্রিন্ট ও শিক্ষার্থীর বেশি কাগজ লাগার কারণে কিছু টাকা খরচ হতে পারে। এজন্য মূল্যায়ন পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি নেয়া যাবে না। কোন বিদ্যালয়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা করে ফি আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরকে ফি নেওয়া থেকে বিরত রাখব। উপজেলা

নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নে ফি নেওয়ার বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

বানিয়াচং ইসলাহুল উম্মাহ পরিষদের উদ্যোগে মেধাবী ও কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ

বানিয়াচংয়ে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ফি নেওয়ার অভিযোগ

আপডেট সময় ০১:২১:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

মোঃ আব্দাল মিয়া : হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে নতুন কারিকুলামে বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, শিখন সামগ্রীর মাধ্যমে শিখন এবং মূল্যায়ন কার্যক্রম চালাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার ফি আদায় করার নির্দেশনা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে না থাকলেও লোকনাথ রমন বিহারি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বানিয়াচং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ডাঃ ইলিয়াস একাডেমি, মেধা বিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়সহ উপজেলার প্রায় সকল বিদ্যালয়সমূহে ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষার ফি বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা করে ফি নেয়া হচ্ছে তাও কোন রশিদ ছাড়া।

পরীক্ষার ফি না দিলে শিক্ষার্থীদের নানাভাবে ভয়ভীতিও প্রদর্শন করা হয়। অভিভাবকরা আরও জানান, প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়িতে এসাইনমেন্ট দিলে শিক্ষার্থীরা মোবাইলের ইউটিউব থেকে দেখে খাতায় লিখে নিয়ে শিক্ষকদের দেখাতে হয়। আগের চেয়ে এখন ছেলে মেয়েদের কাগজ কলমসহ বিভিন্ন উপকরণ কিনে দিতে হয়। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অভিভাবকদের। সোমবার (১১নভেম্বর) সরেজমিনে গেলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির পরীক্ষার ন্যায় ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৩৫০টাকা করে ফি আদায় করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের পরিবারের তেমন কোন আয় রোজগারী নেই।

অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ। পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি তা দিতে পারছি না। এ বিষয়ে বানিয়াচং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক পারভিন আক্তার জানান, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিতে অনেক টাকার কাগজ লাগে। ফি না নিলে এত টাকা পাব কোথায়? সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩৫০ টাকা করে ফি আদায় করেছি। মেধা বিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ জানান, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি না নিয়ে চলার কোন উপায় নেই। কারণ তাদের পরীক্ষা নেওয়া অনেক ব্যয়বহুল। সরকারি নির্দেশনায় ফি নেওয়া বা না নেওয়ার স্পষ্ট কোন উল্লেখ নেই।

লোকনাথ রমন বিহারি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন জানান, বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিতে কাগজ, প্রশ্নপত্র ছাপানোসহ বিভিন্ন উপকরণের খরচ হিসেবে আমরা ফি বাবদ ষান্মাসিক ও বার্ষিক মূল্যায়নের ফি ৩০০ টাকা করে সরকারি নির্দেশনা অনুসারে আদায় করেছি। বানিয়াচং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুন মিয়া জানান, সরকারি লিখিত নির্দেশনা অনুসারে মূল্যায়ন পরীক্ষার ফি প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০০ টাকা আদায় করেছি। তিনি আরও বলেন, জেলার বিদ্যালয়গুলো থেকে আমরা অনেক কম ফি নিয়েছি। ডাঃ ইলিয়াছ একাডেমি এর প্রধান শিক্ষক মোঃ হেমায়েত আলী খান জানান, সরকারি লিখিত নির্দেশনা অনুসারে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির মূল্যায়নে ৩০০ টাকা করে প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শামছুল হক জানান, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য ফি নেওয়ার কোন নির্দেশনা এখন পর্যন্ত নেই। পরীক্ষার নির্দেশনাগুলো প্রিন্ট ও শিক্ষার্থীর বেশি কাগজ লাগার কারণে কিছু টাকা খরচ হতে পারে। এজন্য মূল্যায়ন পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি নেয়া যাবে না। কোন বিদ্যালয়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা করে ফি আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরকে ফি নেওয়া থেকে বিরত রাখব। উপজেলা

নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নে ফি নেওয়ার বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।