ঢাকা ১১:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্ছ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার : এমপি মজিদ খান Logo ভূমি ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে: এমপি মজিদ খান Logo আরাকান রাজ্যের ইতিহাস Logo বানিয়াচংয়ে ব্যবসায়ী নেতা মতিউর রহমান মতির উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo বানিয়াচংয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান: ৬ হাজার টাকা জরিমানা Logo মিরপুর ইসলামী একাডেমীর নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধন Logo বানিয়াচংয়ের তাহমিদুল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক নিযুক্ত Logo বানিয়াচংয়ে ফের সংঘর্ষ : ১জন নিহত Logo বানিয়াচংয়ে আইডিয়েল কলেজের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন Logo বানিয়াচংয়ে ভূমি সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন

ধর্ষণ ! নারীরা আতঙ্কিত

  • তরঙ্গ ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০১:৫১:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ অক্টোবর ২০২০
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

আবদাল মিয়া : চলমান ধর্ষণ খুবই ভয়ঙ্কর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ধর্ষণ ঘটনা এতই ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে যে একে “করোনা” মহামারির মতো ধর্ষণ মহামারি বললেও ভুল হবে না। ঘরে, বাইরে নারী ও শিশুরা আজ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ১৩জন দেশের কোথাও না কোথাও শিশু, কিশোরী কিংবা যে কোন বয়সের নারী ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। স্কুল বা কলেজ ছাত্রীরা দুর্বৃত্তদের পাশাপাশি শিক্ষকের কাছেও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। স্বামীর সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণ,বাসের ভিতর ড্রাইভার ও হেলপারের পাশবিকতার শিকার হচ্ছে নারী। এমনকি ধর্ষণের পর নিমর্মভাবে হত্যার ঘটনাও যেন অহরহ ঘটছে। সমাজে এক শ্রেণির মানুষরূপি জানোয়ার যেন উন্মাদ ও উন্মত্ত হয়ে পড়েছে! এতে করে সামাজিক শাসন ও শৃঙ্খলার বিপর্যয় ঘটেছে। এসব নিয়ে এক দিকে চলছে বক্তৃতা, বিবৃতি, প্রতিবাদ আর গণমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা। অপরদিকে ক্রমেই বাড়ছে ধর্ষণের তীব্রতা। কোন ভাবেই যেন বন্ধ হচ্ছে না ধর্ষণ সন্ত্রাস। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই দেশে  ধর্ষণের তীব্রতার সংবাদ সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি এমসি কলেজ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের নারী ধর্ষণের ঘটনা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারে জনমনে এক অনৈসর্গিক আতঙ্ক বিরাজ করছে! এ ধরণের লোমহর্ষক ঘটনায় সহজেই অনুমেয় যে দেশ যেন লম্পটদের এক অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। কোন ভাবেই এ জঘন্য অপকর্ম থামানো যাচ্ছে না। আইন-আদালত-শাস্তির ভয় কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করছে না ধর্ষক নামের পশুরা। প্রতিদিন প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে দিবালোকেও যে সব ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে তার বেশির ভাগই নানা কারণে বিচারের মুখোমুখি করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যে কারণে ধর্ষকরা অবাধে বিচরণ করছে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায় ধর্ষণ ঘটনার পর ধর্ষকরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষমতাবানদের আশ্রয়ে যাচ্ছে। যে কারণে ক্ষমতাবানদের কাছে ধর্ষণের সঠিক বিচার চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। সম্প্রতি সিলেট এমসি কলেজ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ঘটনায় ক্ষমতাসীন একাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার বিষয়টি তার একটি প্রমাণ। তবে অনেক ক্ষেত্রে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা নেয়া হচ্ছে। যারা মামলা করার সুযোগ পাচ্ছেন তারা আবার অনেকে পড়ছেন নতুন বিপদে। আসামী পক্ষে মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানা ধরণের হুমকি দেয়া হচ্ছে। অনেকে ধর্ষকদের দাপটে বাড়ি-ঘর, এমনকি এলাকাও ছেড়ে যেতে হচ্ছে। ইজ্জতহানির শিকার নারীদের অনেকে আবার আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। এমন জঘন্য অপরাধের বিচার চেয়ে না পেয়ে ট্রেনের নীচে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এমন খবরও গণমাধ্যমে আসছে। ক্রমাগত ধর্ষণ যেমন মহামারি পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে তেমনি ধর্ষকেরা হয়ে উঠেছে অপ্রতিরোধ্য।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় এসব লম্পট দুর্বৃত্তের বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন দলের আশ্রয়ে গিয়ে নেতাকর্মী সেজে পার পেয়ে যাচ্ছে অপকৌশলে। এসব সংবাদই গণমাধ্যমে আমরা দেখতে পারছি। তবে ক্ষমতাসীন দল থেকে বলা হচ্ছে অপরাধী যেই হোক তাকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। অনেককে দল থেকে বহিস্কার করা হচ্ছে। আবার অনেককে বহিস্কারের সাথে সাখে জেলেও দেওয়া হচ্ছে। এরপরও এসব অপরাধ থামছে না। ধর্ষণ সন্ত্রাসের শিকার হয়ে দেশের নারী সমাজ আজ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শিশু, কিশোরী কিংবা যে কোন বয়সের নারী কেউই নিরাপদ নন। এ বর্বরতার শিকার শিশু, কিশোরী ও নারীদের অনেক ক্ষেত্রে হত্যা করা হচ্ছে। এখন ধর্ষণ চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, চলন্ত গণপরিবহনে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে,অফিসে,বাসাবাড়িতে ও রাস্তাঘাটে। নারীরা আজ কোথাও নিরাপদ নয়। নিরাপদ নয় কর্মস্থলেও। ধর্ষণ হঠাৎ করে যেন মারাত্মক পর্যায়ে বেড়ে গিয়েছে। তাই চলমান ধর্ষণ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে মাঠে নামার সময় এখন চুড়ান্ত পর্যায়ে। এ ব্যপারে কোন কালক্ষেপনের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। তবে আশার কথা হচ্ছে গণদাবির মুখে ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড হিসেবে সম্প্রতি আইন পাশ হয়েছে। এখন এ আইনের যথাযথ প্রয়োগ চান দেশবাসী। ধর্ষক যে দলেরই হোক তার যেন কোন রাজনৈতিক পরিচয় না থাকে সেটাও দেখতে চান বোদ্ধা মহল। তাহলেই এদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

লেখক : দৈনিক প্রতিদিনের বাণীর বানিয়াচং প্রতিনিধি ও বিশেষ প্রতিনিধি : তরঙ্গ টুয়েন্টিফোর ডটকম।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্ছ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার : এমপি মজিদ খান

ধর্ষণ ! নারীরা আতঙ্কিত

আপডেট সময় ০১:৫১:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ অক্টোবর ২০২০

আবদাল মিয়া : চলমান ধর্ষণ খুবই ভয়ঙ্কর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ধর্ষণ ঘটনা এতই ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে যে একে “করোনা” মহামারির মতো ধর্ষণ মহামারি বললেও ভুল হবে না। ঘরে, বাইরে নারী ও শিশুরা আজ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ১৩জন দেশের কোথাও না কোথাও শিশু, কিশোরী কিংবা যে কোন বয়সের নারী ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। স্কুল বা কলেজ ছাত্রীরা দুর্বৃত্তদের পাশাপাশি শিক্ষকের কাছেও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। স্বামীর সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণ,বাসের ভিতর ড্রাইভার ও হেলপারের পাশবিকতার শিকার হচ্ছে নারী। এমনকি ধর্ষণের পর নিমর্মভাবে হত্যার ঘটনাও যেন অহরহ ঘটছে। সমাজে এক শ্রেণির মানুষরূপি জানোয়ার যেন উন্মাদ ও উন্মত্ত হয়ে পড়েছে! এতে করে সামাজিক শাসন ও শৃঙ্খলার বিপর্যয় ঘটেছে। এসব নিয়ে এক দিকে চলছে বক্তৃতা, বিবৃতি, প্রতিবাদ আর গণমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা। অপরদিকে ক্রমেই বাড়ছে ধর্ষণের তীব্রতা। কোন ভাবেই যেন বন্ধ হচ্ছে না ধর্ষণ সন্ত্রাস। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই দেশে  ধর্ষণের তীব্রতার সংবাদ সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি এমসি কলেজ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের নারী ধর্ষণের ঘটনা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারে জনমনে এক অনৈসর্গিক আতঙ্ক বিরাজ করছে! এ ধরণের লোমহর্ষক ঘটনায় সহজেই অনুমেয় যে দেশ যেন লম্পটদের এক অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। কোন ভাবেই এ জঘন্য অপকর্ম থামানো যাচ্ছে না। আইন-আদালত-শাস্তির ভয় কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করছে না ধর্ষক নামের পশুরা। প্রতিদিন প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে দিবালোকেও যে সব ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে তার বেশির ভাগই নানা কারণে বিচারের মুখোমুখি করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যে কারণে ধর্ষকরা অবাধে বিচরণ করছে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায় ধর্ষণ ঘটনার পর ধর্ষকরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষমতাবানদের আশ্রয়ে যাচ্ছে। যে কারণে ক্ষমতাবানদের কাছে ধর্ষণের সঠিক বিচার চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। সম্প্রতি সিলেট এমসি কলেজ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ঘটনায় ক্ষমতাসীন একাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার বিষয়টি তার একটি প্রমাণ। তবে অনেক ক্ষেত্রে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা নেয়া হচ্ছে। যারা মামলা করার সুযোগ পাচ্ছেন তারা আবার অনেকে পড়ছেন নতুন বিপদে। আসামী পক্ষে মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানা ধরণের হুমকি দেয়া হচ্ছে। অনেকে ধর্ষকদের দাপটে বাড়ি-ঘর, এমনকি এলাকাও ছেড়ে যেতে হচ্ছে। ইজ্জতহানির শিকার নারীদের অনেকে আবার আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। এমন জঘন্য অপরাধের বিচার চেয়ে না পেয়ে ট্রেনের নীচে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এমন খবরও গণমাধ্যমে আসছে। ক্রমাগত ধর্ষণ যেমন মহামারি পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে তেমনি ধর্ষকেরা হয়ে উঠেছে অপ্রতিরোধ্য।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় এসব লম্পট দুর্বৃত্তের বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন দলের আশ্রয়ে গিয়ে নেতাকর্মী সেজে পার পেয়ে যাচ্ছে অপকৌশলে। এসব সংবাদই গণমাধ্যমে আমরা দেখতে পারছি। তবে ক্ষমতাসীন দল থেকে বলা হচ্ছে অপরাধী যেই হোক তাকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। অনেককে দল থেকে বহিস্কার করা হচ্ছে। আবার অনেককে বহিস্কারের সাথে সাখে জেলেও দেওয়া হচ্ছে। এরপরও এসব অপরাধ থামছে না। ধর্ষণ সন্ত্রাসের শিকার হয়ে দেশের নারী সমাজ আজ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শিশু, কিশোরী কিংবা যে কোন বয়সের নারী কেউই নিরাপদ নন। এ বর্বরতার শিকার শিশু, কিশোরী ও নারীদের অনেক ক্ষেত্রে হত্যা করা হচ্ছে। এখন ধর্ষণ চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, চলন্ত গণপরিবহনে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে,অফিসে,বাসাবাড়িতে ও রাস্তাঘাটে। নারীরা আজ কোথাও নিরাপদ নয়। নিরাপদ নয় কর্মস্থলেও। ধর্ষণ হঠাৎ করে যেন মারাত্মক পর্যায়ে বেড়ে গিয়েছে। তাই চলমান ধর্ষণ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে মাঠে নামার সময় এখন চুড়ান্ত পর্যায়ে। এ ব্যপারে কোন কালক্ষেপনের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। তবে আশার কথা হচ্ছে গণদাবির মুখে ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড হিসেবে সম্প্রতি আইন পাশ হয়েছে। এখন এ আইনের যথাযথ প্রয়োগ চান দেশবাসী। ধর্ষক যে দলেরই হোক তার যেন কোন রাজনৈতিক পরিচয় না থাকে সেটাও দেখতে চান বোদ্ধা মহল। তাহলেই এদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

লেখক : দৈনিক প্রতিদিনের বাণীর বানিয়াচং প্রতিনিধি ও বিশেষ প্রতিনিধি : তরঙ্গ টুয়েন্টিফোর ডটকম।