ঢাকা ০৪:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নবীগঞ্জে ইফা কর্তৃক জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা Logo সু-শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে জনসাধারণকে তথ্য জানাতে হবে : ড. আব্দুল হাকিম Logo বানিয়াচং মডেল প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল সম্পন্ন : সভাপতি লিটন, সম্পাদক আব্দাল মিয়া Logo নবীগঞ্জে মোটরসাইকেল চাপায় স্কুল ছাত্র নিহত : মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo আজ হবিগঞ্জ আসছেন কবির বিন আনোয়ার : জেলা আ’লীগ অফিসে উদ্বোধন করবেন স্মার্ট কর্নার Logo উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে আবারও নির্বাচিত করুন : এমপি মজিদ খান Logo ইকরাম বাজারে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ঘর পরিদর্শন করেছেন এমপি মজিদ খান Logo উন্নত স্বাস্থ্য সেবার ব্রত নিয়ে বানিয়াচং গ্যানিংগঞ্জ বাজারে সততা ডায়াগস্টিক সেন্টার উদ্বোধন Logo বানিয়াচংয়ে গ্রাম্য দাঙ্গা রোধে দেশীয় অস্ত্রবাজদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় আনা হবে Logo বানিয়াচংয়ে ইকরাম বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৯টি দোকান পুড়ে ছাঁই : ব্যাপক ক্ষতি

দাজ্জালের আবির্ভাব !

  • তরঙ্গ ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৩:২৩:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই ২০২০
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে

মাওলানা মুশাহিদ আহমদ :
দাজ্জাল আদম সন্তানের একজন। মুমিনদের পরীক্ষার জন্য আল্লাহ তা’য়ালা তাকে অলৌকিক কিছু ক্ষমতা দিবেন। অলৌকিক সব ক্ষমতা ও জাদুময় কর্মকান্ডের মাধ্যমে বহু লোককে সে তার অনুসারি করে ফেলবে। কেউ লোভে, কেউ আক্রমণের ভয়ে আবার কেউবা ইসলামকে নিশ্চিন্থ করতে তার অনুসারি হবে। দাজ্জাল নিজেকে প্রভু ও আল্লাহ হিসেবে দাবি করবে। তার দাবির পক্ষে কিছু প্রমানও উপস্থাপন করবে। তখন একদল মানুষ নিজেদের বাঁচাতে দাজ্জালের অনুসারি হবে এবং তারাই ঈমানহারা হয়ে জাহান্নামি হবে।
দাজ্জালের পরিচয় : দাজ্জাল আরবি শব্দ দাজলুন থেকে এসেছে। যার অর্থ হলো প্রতারণা করা, ছদ্ম আবরণে লুকিয়ে রাখা, মিথ্যাবলা ইত্যাদি। দাজ্জাল শব্দের প্রসিদ্ধ অর্থ হচ্ছে মহা মিথ্যুক।দাজ্জাল কোন এক অচীন দ্বীপে লৌহ শিকলে বাঁধা রয়েছে। শেষ যামানায় দাজ্জাল বাঁধনমুক্ত হয়ে আত্মপ্রকাশ করবে। সমগ্র দুনিয়ায় তার ফেতনা ছড়িয়ে পড়বে!
ড. মুহাম্মদ ইবনে আব্দুর রহমান আরেফী রচিত‘নেহায়াতুল আলম’ গ্রন্থে দাজ্জালের পরিচয় দেওয়া হয়েছে।
(১) দাজ্জাল খাট এবং দুই নলার মাঝে যথেষ্ট দূরত্বের কারণে চলনে ত্রুটিযুক্ত হবে।
(২) চুল অস্বাভিক কুকড়ো এবং অগোছালো হবে।
(৩) অত্যধিক ঘনকেশ বিশিষ্ট হবে।
(৪) বামচোখ সম্পূর্ণ কানা হবে।
(৫) অস্বাভাবিক সাদাদেহ বর্ণ হবে।
(৬) প্রশস্থ কপাল হবে।
(৭) দু’চোখের মাঝামাঝিতে কাফের লেখা থাকবে। যা শিক্ষিক, অশিক্ষিত সকল ম’মিন দেখতে পাবে।
(৮) আঁটকুড়া হবে।
দাজ্জালের প্রকাশস্থল : হযরত আবুবকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, নিশ্চয় দাজ্জাল প্রাচ্যের খোরাসান এলাকা থেকে আত্মপ্রকাশ করবে।(তিরিমযী-২২৩৭)
দাজ্জালের ভ্রমণগতি : হযরত নাওয়াজ বিন সাময়ান (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.)কে দাজ্জালের চলারগতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, দ্রুতগামী বাতাস বৃষ্টিকে যেভাবে চালিয়ে নেয় দাজ্জালের চলার গতিও সেভাবে হবে।
দাজ্জাল প্রকাশের পূর্বে বিশ্ব পরিস্থিতি : দাজ্জাল প্রকাশের আগে মুসলমান এং রোমান খৃস্টানদের মধ্যে বড় ধরণের কয়েকটি যুদ্ধ হবে। সেসব যুদ্ধে মুসলমানরা চূড়ান্ত বিজয় লাভ করবে।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেন, কেয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না রোমক (খৃস্ট) সম্প্রদায় আমাক মতান্তরে দাবেক প্রান্তরে এসে একত্রিত হবে। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে দামেস্ক শহর থেকে একদল শ্রেষ্ঠ মুসলমান বের হবে। উভয় বাহিনী মুখোমুখি হলে রোমক সম্প্রদায় বলবে তোমরা সরে যাও! ধর্ম ত্যাগীদেরকে আমরা হত্যা করতে এসেছি। মুসলমানগণ তখন বলবেন, দ্বীনী ভাইদেরকে কখনো তোমাদের হাতে তুলে দিব না। ফলে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। এক তৃতীয়াংশ মুসলমান পরাজিত হয়ে পালিয়ে যাবে। এদের তাওবা আল্লাহ কখনো কবুল করবেন না। এক তৃতীয়াংশ নিহত হয়ে যাবে। আল্লাহর কাছে তাঁরা শ্রেষ্ঠ শহীদের মর্যাদা লাভ করবে। অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশকে আল্লাহ তা’য়ালা মহা বিজয় দান করবেন। ফেতনা কখনো তাদের গ্রাস করতে পারবে না। সামনে এগিয়ে তারা কনষ্ট্যান্টিনোপল বিজয় করবে। তরবারিগুলো গাছের সাথে ঝুলিয়ে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ বন্টন করতে থাকবে। হঠাৎ শয়তান তাদের মাঝে ঘোষণা করবে“ দাজ্জাল তোমাদের পরিবারগুলোকে ধাওয়া করছে”। ঘোষণাটি মিথ্যে হলেও মুসলমানগণ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ মাটিতে ফেলে দিয়ে স্বদেশ অভিমুখে রওয়ানা হবে। শামে ফিওে আসার পর সত্যিই দাজ্জাল বের হয়ে আসবে।( মুসলিম শরীফ-৭৪৬০)
(চলবে)
লেখক : বিশিষ্ট আলেম ও প্রাবন্ধিক, বানিয়াচং, হবিগঞ্জ।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

নবীগঞ্জে ইফা কর্তৃক জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা

দাজ্জালের আবির্ভাব !

আপডেট সময় ০৩:২৩:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই ২০২০

মাওলানা মুশাহিদ আহমদ :
দাজ্জাল আদম সন্তানের একজন। মুমিনদের পরীক্ষার জন্য আল্লাহ তা’য়ালা তাকে অলৌকিক কিছু ক্ষমতা দিবেন। অলৌকিক সব ক্ষমতা ও জাদুময় কর্মকান্ডের মাধ্যমে বহু লোককে সে তার অনুসারি করে ফেলবে। কেউ লোভে, কেউ আক্রমণের ভয়ে আবার কেউবা ইসলামকে নিশ্চিন্থ করতে তার অনুসারি হবে। দাজ্জাল নিজেকে প্রভু ও আল্লাহ হিসেবে দাবি করবে। তার দাবির পক্ষে কিছু প্রমানও উপস্থাপন করবে। তখন একদল মানুষ নিজেদের বাঁচাতে দাজ্জালের অনুসারি হবে এবং তারাই ঈমানহারা হয়ে জাহান্নামি হবে।
দাজ্জালের পরিচয় : দাজ্জাল আরবি শব্দ দাজলুন থেকে এসেছে। যার অর্থ হলো প্রতারণা করা, ছদ্ম আবরণে লুকিয়ে রাখা, মিথ্যাবলা ইত্যাদি। দাজ্জাল শব্দের প্রসিদ্ধ অর্থ হচ্ছে মহা মিথ্যুক।দাজ্জাল কোন এক অচীন দ্বীপে লৌহ শিকলে বাঁধা রয়েছে। শেষ যামানায় দাজ্জাল বাঁধনমুক্ত হয়ে আত্মপ্রকাশ করবে। সমগ্র দুনিয়ায় তার ফেতনা ছড়িয়ে পড়বে!
ড. মুহাম্মদ ইবনে আব্দুর রহমান আরেফী রচিত‘নেহায়াতুল আলম’ গ্রন্থে দাজ্জালের পরিচয় দেওয়া হয়েছে।
(১) দাজ্জাল খাট এবং দুই নলার মাঝে যথেষ্ট দূরত্বের কারণে চলনে ত্রুটিযুক্ত হবে।
(২) চুল অস্বাভিক কুকড়ো এবং অগোছালো হবে।
(৩) অত্যধিক ঘনকেশ বিশিষ্ট হবে।
(৪) বামচোখ সম্পূর্ণ কানা হবে।
(৫) অস্বাভাবিক সাদাদেহ বর্ণ হবে।
(৬) প্রশস্থ কপাল হবে।
(৭) দু’চোখের মাঝামাঝিতে কাফের লেখা থাকবে। যা শিক্ষিক, অশিক্ষিত সকল ম’মিন দেখতে পাবে।
(৮) আঁটকুড়া হবে।
দাজ্জালের প্রকাশস্থল : হযরত আবুবকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, নিশ্চয় দাজ্জাল প্রাচ্যের খোরাসান এলাকা থেকে আত্মপ্রকাশ করবে।(তিরিমযী-২২৩৭)
দাজ্জালের ভ্রমণগতি : হযরত নাওয়াজ বিন সাময়ান (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.)কে দাজ্জালের চলারগতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, দ্রুতগামী বাতাস বৃষ্টিকে যেভাবে চালিয়ে নেয় দাজ্জালের চলার গতিও সেভাবে হবে।
দাজ্জাল প্রকাশের পূর্বে বিশ্ব পরিস্থিতি : দাজ্জাল প্রকাশের আগে মুসলমান এং রোমান খৃস্টানদের মধ্যে বড় ধরণের কয়েকটি যুদ্ধ হবে। সেসব যুদ্ধে মুসলমানরা চূড়ান্ত বিজয় লাভ করবে।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেন, কেয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না রোমক (খৃস্ট) সম্প্রদায় আমাক মতান্তরে দাবেক প্রান্তরে এসে একত্রিত হবে। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে দামেস্ক শহর থেকে একদল শ্রেষ্ঠ মুসলমান বের হবে। উভয় বাহিনী মুখোমুখি হলে রোমক সম্প্রদায় বলবে তোমরা সরে যাও! ধর্ম ত্যাগীদেরকে আমরা হত্যা করতে এসেছি। মুসলমানগণ তখন বলবেন, দ্বীনী ভাইদেরকে কখনো তোমাদের হাতে তুলে দিব না। ফলে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। এক তৃতীয়াংশ মুসলমান পরাজিত হয়ে পালিয়ে যাবে। এদের তাওবা আল্লাহ কখনো কবুল করবেন না। এক তৃতীয়াংশ নিহত হয়ে যাবে। আল্লাহর কাছে তাঁরা শ্রেষ্ঠ শহীদের মর্যাদা লাভ করবে। অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশকে আল্লাহ তা’য়ালা মহা বিজয় দান করবেন। ফেতনা কখনো তাদের গ্রাস করতে পারবে না। সামনে এগিয়ে তারা কনষ্ট্যান্টিনোপল বিজয় করবে। তরবারিগুলো গাছের সাথে ঝুলিয়ে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ বন্টন করতে থাকবে। হঠাৎ শয়তান তাদের মাঝে ঘোষণা করবে“ দাজ্জাল তোমাদের পরিবারগুলোকে ধাওয়া করছে”। ঘোষণাটি মিথ্যে হলেও মুসলমানগণ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ মাটিতে ফেলে দিয়ে স্বদেশ অভিমুখে রওয়ানা হবে। শামে ফিওে আসার পর সত্যিই দাজ্জাল বের হয়ে আসবে।( মুসলিম শরীফ-৭৪৬০)
(চলবে)
লেখক : বিশিষ্ট আলেম ও প্রাবন্ধিক, বানিয়াচং, হবিগঞ্জ।