আজহার উদ্দিন শিমুল : আমার ফেসবুক আইডি ব্লু ভেরিফাইড হওয়ার পর নানা মানুষ জানতে চেয়েছেন এটার সম্পর্কে? এখনো প্রতিদিন ফেসবুকে যুক্ত থাকা বন্ধুরা ম্যাসেজ দেন ও ফলোয়ার লিস্টে যারা আছেন তাঁরা ‘ম্যাসেজ রিকুয়েষ্ট/স্প্যাম বক্সে’ বার্তা পাঠান। চেষ্টা করি সবার উত্তর দেওয়ার৷ সবার আগ্রহ কিভাবে করতে হয় ফেসবুক ব্লু ভেরিফাই? দেখুন- ফেসবুক ব্লু ভেরিফাই আহামরি কিছু না, আবার সহজে পেয়ে যাওয়ার মতো বিষয়ও না।
আপনাকে সব ক্রাইটেরিয়া ফিলআপ করতে হবে ফেসবুকের। ফলোয়ার কত লাগে ফেসবুক কোথাও স্পষ্ট করে এখনো এই কথা বলে নি। বিভিন্নজন বিভিন্ন কথা বলেন। অনেকে বলেন ১০/১৫/২০ হাজার বা তারচেয়ে বেশি। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় নি এত ফলোয়ার লাগে। আপনি দেখবেন ১-২ লাখ ফলোয়ার থাকার পরও অনেকের ব্লু ভেরিফাই হয় না, আবার আমার মতো এর চেয়ে কম সংখ্যক ফলোয়ার নিয়েও অনেকের হয়ে যায়।
আমি মোট ৭বার চেষ্টা করি। ৬বারই ব্যর্থ হই।
৭ বারের চেষ্টা গত ২০ জানুয়ারি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আমার আইডি যাচাই-বাছাই করে ব্লু ব্যাজ প্রদান করে। আমার সময় লেগেছে ৪ দিন। আমি ১৬ তারিখ দুপুরে আবেদন করি। আমি নিজে নিজেই আবেদন করেছি।
বলে রাখা ভালো যে, সাধারণত ফেসবুকে আপনি যে তথ্য দিয়ে রেখেছেন এবাউট সেকশনে তার সাথে আপনার কিছু ডকুমেন্টসের (পাসপোর্ট/ভোটার আইডি) সাদৃশ্য থাকতে হবে।
আপনার এবাউট সেকশনের সব তথ্য ‘অনলি মি’ করা থাকলেও সমস্যা নেই। কারণ আমার সব তথ্যও আবেদন করার সময় অনলি মি করা ছিলো। এখনো দুই-একটা ছাড়া সব অনলি মি করা।
আপনার পাসপোর্ট/ভোটার আইডি/ড্রাইভিং লাইসেন্স স্ক্যান করে নিবেন রঙিন। আমি পাসপোর্ট ও ভোটার আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি জমা দিয়েছিলাম।
এখন আসি মূল কথায়! মনযোগ দিয়ে প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন করার চেষ্টা করবেন।
° প্রথমে এই ঠিকানায় (https://m.facebook.com/help/contact/342509036134712) প্রবেশ করুন। এরপর পেজ বা প্রোফাইল নির্বাচন করতে হবে। আপনি যদি আপনার ব্যক্তিগত প্রোফাইল ভেরিফাই করতে চান তাহলে ভেরিফিকেশন টাইপে ‘প্রোফাইল’ সিলেক্ট করবেন, পেজ হলে পেজ। প্রোফাইল ভেরিফাই করতে চাইলে নির্ধারিত বক্সে প্রোফাইলে লিংক দিবেন (Provide your facebook profile link) এভাবে (https://www.facebook.com/aushimul.bd)।
° আপনার প্রোফাইল কোন ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে চান সেটা উল্লেখ করবেন। অনেকগুলো অপশন আসবে। আমি যেহেতু সাংবাদিকতার সাথে সংশ্লিষ্ট সেহেতু ‘News/Media’ ক্যাটাগরি দিয়েছিলাম। এটা সম্পন্ন হওয়ার পর আসবে আপনি কোন দেশ থেকে আবেদন করছেন।
সেখানে আপনি বাংলাদেশ সিলেক্ট করবেন। অথবা আপনি যে দেশের। (মোবাইল দিয়ে আবেদন করলে অনেক সময় আসে না, চেষ্টা করবেন পিসি দিয়ে করার)।
° তারপর অফিসিয়াল আইডি এর স্ক্যান কপি আপলোড করুন। একসাথে দুটো আপলোড না করে একটার পর আরেকটা করবেন। ফাইলের সাইজ বড়ো হলে কিছু সময় নিবে। তবে চেষ্টা করবেন স্ক্যান কপির সাইজ এক এমবির নিচে রাখা। এত করে সহজে আপলোড হয়।
তারপর আসবে- Please share why this Facebook Page or profile should be verified. এটার অর্থ আপনার আপনার একাউন্ট কেনো ভেরিফাই করতে চান? এই বক্সে আপনি গুছিয়ে লিখবেন কারণটা। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। আমি কারণ হিসেবে দিয়েছিলাম- ‘আমি একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক। আমার পাঠকরা যাতে সহজে আমার একাউন্ট চিহ্নিত করতে পারে এজন্য আমার ব্লু ভেরিফাই দরকার,’।
ব্যাস, এতটুকুই। তবে যাই লিখবেন শুদ্ধ ইংরেজিতে লিখবেন। দরকার হলে IELTS এ যারা ক্লাস করে তাঁদের সহযোগিতা নিবেন
তবুও শুদ্ধ ইংরেজি লিখবেন। 


° এই কাজ করার পর আসবে- ‘List other social media presence accounts’. এটার অর্থ আপনার অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একাউন্ট থাকলে সেটার লিংক। আমার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটের লিংক দিয়েছিলাম (www.azharuddinshimul.com)। তবে আপনারা আপনাদের ফেসবুক পেজ/ইউটিউব চ্যানেল/ইনস্ট্রাগ্রাম/টিকটকসহ অন্যান্য একাউন্টের লিংকও দিতে পারেন। এটা অপশনাল। ইচ্ছে হলে দিবেন। তবে দিলে সাপোর্ট আসবে।
° এটা সম্পন্ন করার পর ‘Additional comments’. অপশনটি আসবে। এটার মানে আপনি সর্বশেষ কিছু লিখতে চাইলে বলেন। এটা এক ধরনের আবেদনপত্র লেখার শেষের প্যারার মতো। যে- বিনীত নিবেদন.. ব্লা ব্লা ব্লা। এটাও অপশনাল।
এবার আপনার শেষ ধাপ। Send বাটনে ক্লিক করে সাবমিট করুন।
তথ্য সাবমিট করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপনার আবেদনের অবস্থা জানাবে ফেসবুক। অথবা কয়েকদিন পরও জানাতে পারে। যদি Eligible হয় তাহলে আপনাকে তাঁরা ফেসবুক ব্লু ভেরিফাই করে দিবে। আর Eligible না হলে ৩০ দিন পর আবার আবেদন করতে বলবে!
যাক, এবার আমারে একটা ধন্যবাদ দিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন।
লেখক : সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক, হবিগঞ্জ।
১৭ মে, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ।