তাহমিনা বেগম গিনি : কেউ একজন বলেছেন, এ সময়ে লাভ, লোকসান,পার্থিব কোনো কিছুর হিসেব করে লাভ নেই।এখন বেঁচে থাকাটাই বড় লাভ””। ভেবে দেখলাম আসলে কথাটি অনেক মূল্যবান।আলহামদুলিল্লাহ,এখনো বেঁচে আছি।তাই লিখতে পারছি।কিন্তু আমরা অনেক আপনজন হারিয়েছি দেশে কিংবা বিদেশে।করোনাকাল একেকজন একেক ভাবে কাটাচ্ছেন,জীবন-জীবিকা,ভিন্ন ভিন্নভাবে অতিবাহিত করছেন। আমি যেহেতু একজন নারী, তাই নারীরা কেমন আছেন, কেমন কাটাচ্ছেন একটু ভাবতে পারি। চাকুরিজীবি নারীরা ছাড়া আমাদের সমাজের বেশী অংশ নারী গৃহিনী।চাকুরীর ওরকম ভেদ আছে,যেমন অফিস,আদালত,ব্যাংক,বীমা,ডাক্তার,শিক্ষক,কল-কারখানা,পুলিশ,সেনাবাহিনী,দফাদারসহ সর্বক্ষেত্রেই নারীরা বর্তমান।গত চার পাঁচ মাস জরুরী দপ্তর ছাড়া সবাই গৃহবন্দী ছিলেন।এখন বেশ কিছু স্বাভাবিক হলেও শিক্ষকবৃন্দ এখনো ঘরেই আছেন।কথা আছে যে মেয়েরা একবার চাকুরীর স্বাদ পায় তাদের ঘরে থাকতে ভালোলাগে না।সত্য কতখানি তারাই বলতে পারবেন।তবে এই করোনাকালে সবচেয়ে বেশী কস্ট পেয়েছেন গৃহিনী নারীরা।একতো গৃহ বন্দী,তার উপর কাজের বুয়া নেই। ছেলেমেয়ের স্কুল কলেজ বন্ধ,গৃহকর্তা বাসায় অস্টপ্রহর। বাসায় বয়স্কজন থাকলে আরো কাজ। উচিত এমন সময়পরিবারের সবার কাজ করা।কিন্তু আমরা ক’টা সংসারে এমন করেছি বা এখনো করছি।যারা স্ত্রীকে,সাহায্য করেছেন তাদের সাধুবাদ জানাই।কিন্তুু বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে এই সময় নারী নির্যাতন ও যৌন নির্যাতন অনেক পরিমাণে বেড়ে গেছে ।গৃহবন্দী বয়স্ক মহিলারা আরো বেশী শৃঙ্খলিত হয়ে পড়েছেন।সরকার সবকিছু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু করোনার সংক্রমন বেড়েই চলেছে।শহর ছাড়িয়ে এখন গ্রামে থাবা বসিয়েছে ঈদের পরে।আজকাল রাস্তাঘাটে কিছুকিছু মহিলা দেখা যায় কিন্তু সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন না।করোনা কবে যাবে কেউ জানে না।হয়তো তাকে সঙ্গী করেই আমাদের চলতে হবে। সেজন্য জীবন যাপনের ধারাও বদলাতে হবে।শুধু সংসার দেখার দায়িত্ব মা’দের একার নয়।বাবা,ছেলে,মেয়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে মার পাশে। তবেই করোনাকাল দূর্বিষহ না হয়ে গৃহকোণ পারিবারিক আনন্দে ভরে উঠবে।সবাই স্বাস্থবিধি মেনে চলি এবং পরিবারের সবাই সুস্থ থাকি।
আগামীতে করোনাকালে শিশুরা কেমন আছে সেই লেখার আশায় রইলাম।
লেখক : কবি ও সাহিত্যিক, হবিগঞ্জ।