শুয়েব চৌধুরী :
ববি।পুরো নাম শাকিলা ববি। হবিগঞ্জ শহরে পরিচিত মুখ। খেলাধুলা, নাটক,ডিবেটিং, বিএনসিসি,সামাজিক সব কর্মকাণ্ডে তার বিচরণ। কম বয়সেই নিজে নিজেই পরিচিতি লাভ করে।
সম্ভবত ৭/৮ বছর আগে সাংবাদিকতার উকুন তার মাথায় বাসা বাঁধে। স্থানীয় একটি পত্রিকায় যোগ দেয়। ওই অফিসে প্রায়ই যেতাম। আমরা একই গ্রামের লোক হওযায় সম্পর্কে দাঁড়ায় দাদা নাতনী। সাংবাদিকতার প্রতি তার দুর্বলতা দেখে মনে মনে ভাবতাম, মেয়ে, এই ছোট শহরে তোর সাংবাদিকতা তো হবেনা বরং নানা বদনামে পরিবার পর্যন্ত ছোঁবে।
চাচা নোমান চৌধুরী মারা যাওয়ার পর ২০১৬ সালে দৈনিক প্রভাকর এর সম্পাদনার দায়িত্ব পড়ে আমার ঘাড়ে। কাকে নিয়ে বের করবো নানা চিন্তায় আমি। ববি নিজেই দাঁড়ায় আমার পাশে। একে তো নতুন অন্যদিকে অবিবাহিত। আর্থিক টানাপোড়েন তো আছেই। এক রাত না ঘুমিয়ে ভেবেও কোনো সমাধান পাইনি। এরপর সাতপাঁচ না ভেবে ঝুঁকি নিলাম। তাকে নিয়ে পত্রিকা বের করবো,আল্লাহ ভরসা। কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ন এসাইনমেন্ট দিয়ে টেষ্ট করলাম। দেখলাম ঝুঁকিকে সে আনন্দ হিসেবে নেয়। অর্থাৎ পরীক্ষায় পাস। বেশ ক’টি নিউজ প্রভাকরকে নতুনভাবে পরিচয় করে দেয় পাঠকের কাছে। এ জগতে যতটুকু অভিজ্ঞতা হয়েছে সবকিছু তাকে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। প্রচার সংখ্যার ব্যারোমিটার যখন উর্ধদিকে তখনই একটি সংবাদের জেরে ২ করা ৪টি (৫৭ ধারায়) মামলায় আমাকে কারাগারে যেতে হল। কতিপয় নামধারী সাংবাদিকের পরামর্শে সেদিন ববির বাসায়ও পুলিশ গিয়ে নানা হুমকিধামকি দিয়ে এসেছে বলে শুনেছি।
অবিবাহিত। কারাগার থেকে বের হয়ে কিছুদিন পত্রিকা বের করে মনে হল একাজ আমার নয়। সংবাদ আর আর্থিক যোগান দেয়ার দুটো চিন্তা করা আমার একার পক্ষে অসম্ভব। আমার মনে হয়েছে এটা কলম দিয়ে ডাকাতি করার মতো।
যাই হোক, এর কিছুদিন পরববির বিয়ে হয়ে গেল সিলেটের ফটো সাংবাদিক মামুনের সাথে। সেখানের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে কাজ করছে। ইতোমধ্যে সিলেটেও সাংবাদিক মহলে পরিচিতি পেয়েছে। গতকাল তার কোল জুড়ে এসেছে রাজকন্যা। এ সুখবর মিলাতে না মিলাতে আজ কিছুক্ষণ আগে হাসপাতাল থেকে আরেকটা শুভ সংবাদ। তা হচ্ছে সিলেট মূল প্রেসক্লাবে সে সদস্যপদ লাভ করেছে। হবিগঞ্জে থাকার সময় প্রায়ই বলতো একটা জাতীয় পত্রিকা বা টিভি চ্যানেলের প্রতিনিধি হলে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে আবেদন করবো। আমাদের মতো ছোট মানসিকতায় তার স্থান প্রেসক্লাবে হতো কি না সন্দেহ। আল্লাহ হয়তো তার মনোবাসনা শুনেছেন। তবে ছোট করে নয়। বড় করে। “স্থান ছাড়লে মান কমে” এ কথাটি সব সময়ই যে সত্য নয় তাই প্রমান করলো সে। আমার সহধর্মিণী শাম্মি প্রায়ই বলতো ঢাকায় গেলে ববি আরো ভালো করতো।