ঢাকা ০৩:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৮ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo বানিয়াচংয়ে স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার Logo এমপি মজিদ খানের মধ্যস্থতায় বানিয়াচং সৈদারটুলা ছান্দের ২ গ্রুপের দ্বন্দ্ব নিরসন Logo মিশর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান পাওয়ায় মুফতি হাফিজুল হককে সংবর্ধনা প্রদান Logo আজমিরীগঞ্জে নিত্যপণ্যের মূল্য চড়া: ক্রেতাদের নাভিশ্বাস Logo একজন কর্মবীর সফল এমপি আব্দুল মজিদ খান Logo বানিয়াচংয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ’কে বিদায় সংবর্ধনা Logo জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী মনজুর চৌধুরী Logo বানিয়াচংয়ে ইফা শিক্ষকদের নিয়ে ক্লাস্টার ট্রেনিং অনুষ্ঠিত Logo আজমিরীগঞ্জে পুলিশের অভিযানে ২০লিটার চোলাই মদ জব্দ : আটক-১ Logo প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) হলেন গোটা জাতির জন্য উত্তম আদর্শ

একজন কর্ম উদ্যোগী ইউএনও’র গল্প

  • তরঙ্গ ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০২:৪৯:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২০
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

মখলিছ মিয়া ॥ কাজ করি মনের ভালো লাগা থেকে। কোন কিছু পাবার আশায় নয়। সরকারি চাকুরীর সুবাধে যখন যেখানে যাই, সে স্থানকেই নিজের আপন ঠিকানা মনে করি। আমি ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। সেই লক্ষ্যে সবাইকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এ উন্নয়ন হবে সামগ্রিক উন্নয়ন। আমি বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বে দেশ অনেক এগিয়েছে, সেই এগিয়ে যাওয়াকে আরো শক্তিশালী করতে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমরাও চাই দেশটা একটি সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। এভাবেই একান্ত স্বাক্ষাৎকারে নিজের ভালো লাগার কথাগুলো ব্যক্ত করলেন বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ রানা। এশিয়ার বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচং। এ গ্রামের রয়েছে বহু বছরের ঐতিহ্যের ইতিহাস। সেই ঐতিহাসিক বানিয়াচংকে একটি মডেল হিসেবে দাঁড় করাতে চান ইউএনও মাসুদ রানা। বানিয়াচং উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগদানের পরপরই ইতিহাস সমৃদ্ধ আমাদের প্রিয় বানিয়াচংকে নিয়ে তিনি নানা পরিকল্পনা হাতে নেন। ইতিমধ্যে বানিয়াচংবাসী সৃষ্টিশীল ইউএনও মাসুদ রানার কার্যক্রম গুলো পরখ করেছেন এবং অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ কাজগুলোর ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন। সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে এমন কোন পেশার লোক নেই যিনি ইউএনও মাসুদ রানাকে চেনেন না। মানুষ বাঁচে তার কর্মে, বয়সে নয়, এ মুলমন্ত্রকে মনে- প্রাণে লালন করে নিজ দায়িত্বের বাইরেও অনেক কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। বিগত বন্যার সময় নিজ বাসায় গরু কোরবানী করে পরিবারের মানুষজনকে সময় না দিয়ে সারা দিন ছুটে বেড়িয়েছেন অসহায় আশ্রয়হীন বন্যার্ত মানুষের মাঝে গোশত বিতরণ করতে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশাপাশি গবাদীপশুর খাদ্য নিয়েও ছুটে বেড়িয়েছেন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে কৃষকের কাছে। যা ছিল চোখের পড়ার মতো। এখনো থেমে যায়নি এ সকল মানবিক কাজগুলো।

 

ছবি- সম্প্রতি পরিবেশ রক্ষায় পায়ে হেটে মাঝ হাওরে গিয়ে পাখি শিকারীকে আইনের আওতায় এনেছেন ইউএনও মাসুদ রানা।

প্রায়শই দেখা যায় অফিসে বসে গরীব, অসহায় মানুষের বিভিন্ন অভিযোগ -অনুযোগ শুনেন। এসময় ব্যক্তিগতভাবে অনেক অসহায় মানুষজনকে আর্থিকভাবে সহযোগিতাও করছেন। এসব মানবিক কাজের পাশাপাশি প্রিয় বানিয়াচংকে নতুনভাবে আরো কিভাবে উপস্থাপন করা যায়,সেই বিষয়গুলো নিয়ে প্রতি নিয়ত নতুন নতুন ধারণা তৈরী করে যাচ্ছেন ইউএনও মাসুদ রানা।
ইতিমধ্যে ইউএনও মাসুদ রানা বানিয়াচংয়ের বিভিন্ন প্রবেশদ্বারকে আকর্ষনীয় করতে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ১০ হাজার গাছের চারা রোপণের অংশ হিসেবে প্রায় ৩হাজার গাছের চারা রোপণ করেছেন। যা দিয়ে ঢেলে সাজানো হচ্ছে পৃথিবীর মহা গ্রাম বানিয়াচংকে। শুধু তাই নয়, মানুষের জীবন মান উন্নয়নেও নিরবে নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি ভিক্ষুক ও ছিন্নমুল মানুষকে সম্মানজনক পেশায় সংযুক্ত করার জন্য কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। ইউএনও মাসুদ রানা বলেন, চলার পথে অসহায়, হতদরিদ্র মানুষজনকে যখন দেখি তারা অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে, তখনই মনের ভিতরে আলাদা একটা টান মেরে উঠে। এসকল মানুষের কষ্ট লাগবের জন্য আমার অবস্থান থেকে যথা সাধ্য চেষ্টা করি তাদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য। হয়তো বা সবাইকে সহযোগিতা করা সম্ভবও হয়ে উঠে না। কিন্তু আন্তরিকতার কোন ত্রুুটি রাখিনি। এছাড়া পর্যটনের সুবর্ণ ভূমি বানিয়াচংকে পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিতি এনে দিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিয়মিত প্রেরণ করছেন পত্র। সাথে পাঠিয়ে দিচ্ছেন দর্শনীয় বিভিন্ন লোকেশনের মন মাতানো ছবির দৃশ্যায়ন। ইউএনও মাসুদ রানা আরো বলেন, যে কোন মহতি কাজের পেছনে লেগে থাকতে হবে। এক সময় একাজের সফলতা আসবেই। এজন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। বানিয়াচং নিয়ে আরো বহু পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে কাজ করছেন ইউএনও মাসুদ রানা। হয়তো অনেক কাজের বিষয়ে আমরাও জানি না। যখনই মনে হবে একটি কাজের পরিবেশ তৈরী হয়েছে তখনই সেটা বাস্তবায়নের কাজে হাত দিবেন তিনি। ‘সাইকিং করুন,সুন্দর জীবন গড়ুন’ এ শ্লোগানে বানিয়াচং সাইকিং গ্রুফ নামে একটি সংগঠন করতে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে একাজের সাথে সংযুক্ত করেছেন বানিয়াচঙ্গের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজনকে। নিজের আপনজন ছেড়ে সম্পুর্ণ অচেনা একটি জায়গায় শুধুমাত্র চাকুরীর সুবাধে এসে সেই জায়গার মাটি ও মানুষকে নিয়ে ভাবা এবং আপন মনে কাজ করে যাওয়া সত্যিই এক মহানুভব মানুষের কাজ। ইউএনও মাসুদ রানা এক সময় বানিয়াচং থাকবেন না, কিন্তু তাঁর সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে স্মৃতির পাতায় বানিয়াচংবাসীর আজীবন ভালোবাসার মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকবেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বানিয়াচংয়ে স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

একজন কর্ম উদ্যোগী ইউএনও’র গল্প

আপডেট সময় ০২:৪৯:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২০

মখলিছ মিয়া ॥ কাজ করি মনের ভালো লাগা থেকে। কোন কিছু পাবার আশায় নয়। সরকারি চাকুরীর সুবাধে যখন যেখানে যাই, সে স্থানকেই নিজের আপন ঠিকানা মনে করি। আমি ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। সেই লক্ষ্যে সবাইকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এ উন্নয়ন হবে সামগ্রিক উন্নয়ন। আমি বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বে দেশ অনেক এগিয়েছে, সেই এগিয়ে যাওয়াকে আরো শক্তিশালী করতে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমরাও চাই দেশটা একটি সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। এভাবেই একান্ত স্বাক্ষাৎকারে নিজের ভালো লাগার কথাগুলো ব্যক্ত করলেন বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ রানা। এশিয়ার বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচং। এ গ্রামের রয়েছে বহু বছরের ঐতিহ্যের ইতিহাস। সেই ঐতিহাসিক বানিয়াচংকে একটি মডেল হিসেবে দাঁড় করাতে চান ইউএনও মাসুদ রানা। বানিয়াচং উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগদানের পরপরই ইতিহাস সমৃদ্ধ আমাদের প্রিয় বানিয়াচংকে নিয়ে তিনি নানা পরিকল্পনা হাতে নেন। ইতিমধ্যে বানিয়াচংবাসী সৃষ্টিশীল ইউএনও মাসুদ রানার কার্যক্রম গুলো পরখ করেছেন এবং অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ কাজগুলোর ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন। সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে এমন কোন পেশার লোক নেই যিনি ইউএনও মাসুদ রানাকে চেনেন না। মানুষ বাঁচে তার কর্মে, বয়সে নয়, এ মুলমন্ত্রকে মনে- প্রাণে লালন করে নিজ দায়িত্বের বাইরেও অনেক কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। বিগত বন্যার সময় নিজ বাসায় গরু কোরবানী করে পরিবারের মানুষজনকে সময় না দিয়ে সারা দিন ছুটে বেড়িয়েছেন অসহায় আশ্রয়হীন বন্যার্ত মানুষের মাঝে গোশত বিতরণ করতে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশাপাশি গবাদীপশুর খাদ্য নিয়েও ছুটে বেড়িয়েছেন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে কৃষকের কাছে। যা ছিল চোখের পড়ার মতো। এখনো থেমে যায়নি এ সকল মানবিক কাজগুলো।

 

ছবি- সম্প্রতি পরিবেশ রক্ষায় পায়ে হেটে মাঝ হাওরে গিয়ে পাখি শিকারীকে আইনের আওতায় এনেছেন ইউএনও মাসুদ রানা।

প্রায়শই দেখা যায় অফিসে বসে গরীব, অসহায় মানুষের বিভিন্ন অভিযোগ -অনুযোগ শুনেন। এসময় ব্যক্তিগতভাবে অনেক অসহায় মানুষজনকে আর্থিকভাবে সহযোগিতাও করছেন। এসব মানবিক কাজের পাশাপাশি প্রিয় বানিয়াচংকে নতুনভাবে আরো কিভাবে উপস্থাপন করা যায়,সেই বিষয়গুলো নিয়ে প্রতি নিয়ত নতুন নতুন ধারণা তৈরী করে যাচ্ছেন ইউএনও মাসুদ রানা।
ইতিমধ্যে ইউএনও মাসুদ রানা বানিয়াচংয়ের বিভিন্ন প্রবেশদ্বারকে আকর্ষনীয় করতে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ১০ হাজার গাছের চারা রোপণের অংশ হিসেবে প্রায় ৩হাজার গাছের চারা রোপণ করেছেন। যা দিয়ে ঢেলে সাজানো হচ্ছে পৃথিবীর মহা গ্রাম বানিয়াচংকে। শুধু তাই নয়, মানুষের জীবন মান উন্নয়নেও নিরবে নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি ভিক্ষুক ও ছিন্নমুল মানুষকে সম্মানজনক পেশায় সংযুক্ত করার জন্য কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। ইউএনও মাসুদ রানা বলেন, চলার পথে অসহায়, হতদরিদ্র মানুষজনকে যখন দেখি তারা অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে, তখনই মনের ভিতরে আলাদা একটা টান মেরে উঠে। এসকল মানুষের কষ্ট লাগবের জন্য আমার অবস্থান থেকে যথা সাধ্য চেষ্টা করি তাদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য। হয়তো বা সবাইকে সহযোগিতা করা সম্ভবও হয়ে উঠে না। কিন্তু আন্তরিকতার কোন ত্রুুটি রাখিনি। এছাড়া পর্যটনের সুবর্ণ ভূমি বানিয়াচংকে পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিতি এনে দিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিয়মিত প্রেরণ করছেন পত্র। সাথে পাঠিয়ে দিচ্ছেন দর্শনীয় বিভিন্ন লোকেশনের মন মাতানো ছবির দৃশ্যায়ন। ইউএনও মাসুদ রানা আরো বলেন, যে কোন মহতি কাজের পেছনে লেগে থাকতে হবে। এক সময় একাজের সফলতা আসবেই। এজন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। বানিয়াচং নিয়ে আরো বহু পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে কাজ করছেন ইউএনও মাসুদ রানা। হয়তো অনেক কাজের বিষয়ে আমরাও জানি না। যখনই মনে হবে একটি কাজের পরিবেশ তৈরী হয়েছে তখনই সেটা বাস্তবায়নের কাজে হাত দিবেন তিনি। ‘সাইকিং করুন,সুন্দর জীবন গড়ুন’ এ শ্লোগানে বানিয়াচং সাইকিং গ্রুফ নামে একটি সংগঠন করতে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে একাজের সাথে সংযুক্ত করেছেন বানিয়াচঙ্গের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজনকে। নিজের আপনজন ছেড়ে সম্পুর্ণ অচেনা একটি জায়গায় শুধুমাত্র চাকুরীর সুবাধে এসে সেই জায়গার মাটি ও মানুষকে নিয়ে ভাবা এবং আপন মনে কাজ করে যাওয়া সত্যিই এক মহানুভব মানুষের কাজ। ইউএনও মাসুদ রানা এক সময় বানিয়াচং থাকবেন না, কিন্তু তাঁর সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে স্মৃতির পাতায় বানিয়াচংবাসীর আজীবন ভালোবাসার মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকবেন।