তরঙ্গ ডেস্ক :: ২৭ জানুয়ারী বুধবার সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ১৬তম শাহাদত বার্ষিকী পালিত হয়েছে। ২০০৫ সালের ওই দিনে তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভায় গ্রেণেড হামলায় নির্মমভাবে নিহত হন। শাহ এএমএস কিবরিয়ার ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিলো পুস্পস্তবক অর্পণ, শোক র্যালি, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা। ঢাকার বনানীতে গোরস্তানে অবস্থিত মরহুমের কবরস্থানে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় পুস্পস্তবক অর্পণ করেন ড. রেজা কিবরিয়া ও পরিবার-স্বজনরা ছাড়াও গণফোরাম এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন জেলার নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি হবিগঞ্জ- নবীগঞ্জ গণফোরাম এর নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গণফোরাম এর সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া ও পরিবার-স্বজনগণ ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন শহীদ শাহ কিবরিয়ার কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলে অংশ গ্রহণ করেন।
এদিকে, ১৬ বছরেও শাহ এ এম এম কিবরিয়া হত্যাকান্ডের বিচার না হওয়ায় হতাশ তার পরিবার। এ ব্যাপারে বুধবার বিভিন্ন মিডিয়ায় ও এক ভিডিও বার্তায় বক্তব্য প্রদান করে হত্যা রহস্যের উদঘাটন ও বিচারের জোর দাবী জানান ড. রেজা কিবরিয়া। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারী হবিগঞ্জের বৈদ্যারবাজারে আমার বাবা মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সারা জীবন দেশের জন্য কাজ করেছেন। পররাষ্ট্র সচিব ও জাতীসংঘের উপ-মহাসচিব ছিলেন। পরে অর্থমন্ত্রী ও এমপি নির্বাচিত হন। এমপি থাকার সময় বৈদ্যারবাজারে আওয়ামী লীগের এক জনসভায় তিনি আহত হলে কয়েক ঘন্টা পর মারা যান। এর পর ১৬ বছরেও আমার বাবার হত্যার বিচার কাজ নিয়ে চলছে প্রহসন। আমার বাবার হত্যার বিচার নিয়ে বিলম্বের রহস্য আমার পরিবার ও দেশের জন্য উদঘাটন প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। আমি আশাবাদী এই বংলার মাটিতেই আমার বাবার বিচার হবে।

উল্লেখ্য,শাহ এ এম এস কিবরিয়া কর্মজীবনে পররাষ্ট্র সচিব, এসকাপের নির্বাহী সচিবসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন শেষে অবসর গ্রহণ করার পর ১৯৯৪ সালে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। পরে তিনি আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে তিনি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০১ সালে তিনি হবিগঞ্জ-৩ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ছিলেন আওয়ামীলীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারীর দ্বায়িত্ব পালন করেন। মৃদুভাষন নামে একটি সাময়িকির সম্পাদক ছিলেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধের সময় তিনি প্রবাসে দেশের পক্ষে কাজ করেন। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তৎকালীন হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। জনসভা ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। বক্তব্য শেষে যখন তিনি মঞ্চ থেকে নেমে সহকর্মীদের নিয়ে বৈদ্যের বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেইটে আসেন তখনই দিনের আলো নিভে প্রায় সন্ধ্যা। হঠাৎ করেই বিকট শব্দ। হুড়োহুড়িতে চারদিকে গগনবিদারী চিৎকার। আর্জেস গ্রেনেডের আঘাতে অনেকেই ক্ষতবিক্ষত। সেখানে শাহ এ এমএস কিবরিয়া গুরুতর আহত হলে ঢাকা নেয়ার পর মৃত্যু বরণ করেন। ঘটনাস্থলে মারা যান তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা ও এলাকার তিনজন। আহত হন আরও ৭০জন।