আবুল কালাম আজাদ, ইংল্যান্ড থেকে : ইংল্যান্ডে করোনাভাইরাসের সংক্রমন বৃদ্ধি পেতে থাকায় লন্ডনসহ বিশাল অংশে লকডাউন সমতুল্য বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ফলে কয়েক মিলিয়ন মানুষ বিধিনিষেধের আওতায় পড়বেন। বাতিল করা হয়েছে খৃস্ট ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব ক্রিসমাস।গতকাল শনিবার টেলিভিশনে প্রেসকনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ ঘোষণা দেন। আজ রোববার ( ২০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে লন্ডন, সাউথ ইস্ট ইংল্যান্ড এবং ইস্ট অফ ইংল্যান্ড টিয়ার ৪ অর্থাৎ স্তর ৪ এর নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে। এই নিষেধাজ্ঞাগুলো নভেম্বরে ইংল্যান্ডে দেশব্যাপী জারিকৃত লকডাউন এর বিধিনিষেধের সমতুল্য হবে। এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের অবশ্যই সীমিত ছাড়সহ বাড়িতে থাকতে হবে। অত্যাবশকীয় নয় এমন পণ্য সামগ্রী বিক্রিকারী দোকানপাঠ এবং ইনডোর জিমগুলি বন্ধ থাকবে। লোকেরা যখন পারে তখন বাসা থেকে কাজ করা উচিত এবং টিয়ার ফোর ভুক্ত অঞ্চলগুলোতে প্রবেশ বা ছেড়ে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। মসজিদসহ উপাসনালয় খোলা থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞাগুলি ২সপ্তাহ চলবে এবং ৩০ ডিসেম্বর পর্যালোচনা করা হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো ধরণের কার্যক্রম চালু থাকবে না। মানুষ অকারণে বাসার বাইরেও যেতে পারবে না। মানুষকে বাসায় বসে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন বরিস জনসন। তবে নির্মাণ শ্রমিক ও এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কর্মক্ষেত্রে যাওয়ায় কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকছে না।

টিয়ার ৪ যেসব এলাকায় ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে বাইরে থেকে প্রবেশ না করার আহবান জানিয়েছেন বরিস জনসন। এ কড়াকড়ি ২ সপ্তাহের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৩০শে ডিসেম্বর এটি আবারো পর্যালোচনা করে দেখা হবে। তবে এর আগে টিয়ার ৪ লকডাউন চলাকালীন সবার জন্য স্টে হোম অর্ডার জারি থাকবে। ঘোষণায় বৃটিশ নাগরিকদের ভ্রমণ না করার আহবান জানানো হয়েছে। টিয়ার ৪ লকডাউন চলা এলাকায় প্রবেশ করা যাবে না। অন্যান্য এলাকার ক্ষেত্রেও স্থানীয় পর্যায় ছাড়া ভ্রমণ না করার কথা বলেছেন তিনি। এছাড়া, জরুরি কাজ না থাকলে বিদেশ সফর না করার আহবান জানিয়েছেন । বড়দিনে বাসার বাইরে কোনো উৎসব বা সমাবেশ করা যাবে না বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে পারিবারিকভাবে দিনটি উৎযাপন করার কথা বলেছেন তিনি। এ সুযোগ থাকছে না নববর্ষের জন্য। থার্টি ফার্স্ট নাইটেও অন্যান্য দিনের মতো কড়াকড়ি জারি থাকবে। বরিস জনসন বলেন, আমি জানি মানুষ বড়দিনে কত আগ্রহ নিয়ে বসে থাকে পরিবার পরিজন নিয়ে উৎসব করার জন্য। এদিনটি নষ্ট হয়ে যাওয়া কতখানি হতাশার তা আমি জানি। তবে আমাদেরকে এখন অবশ্যই বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার কাছে আর কোনো বিকল্প নেই। এবারের বড়দিন ভিন্ন হবে কারণ আমাদের বাস্তববাদি হওয়া জরুরি। এবারের বড়দিনে যদি আমরা ধৈর্যের পরিচয় দিতে পারি তাহলে ভবিষ্যতের বড়দিন আরো মধুর হবে। বক্তব্যের শেষে বরিস জনসন বৃটিশ নাগরিকদের ভ্যাকসিন গ্রহণের আহবান জানান। তিনি বলেন, বৃটেন পৃথিবীর প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে ভ্যাকসিন নিশ্চিত করেছে। তাই যখন এনএইচএস কর্মীরা আপনাকে ফোন করবে, আপনারা ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষ তাদের ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছে বলেও জানান তিনি।