আবু হেনা, আজমিরীগঞ্জ থেকে : আজমিরীগঞ্জে ১৬ বছর খোঁজে মা ফিরে পেলেন ছেলের রক্তাক্ত মরদেহ। এতগুলো বছর ধরে খোঁজতে-খোঁজতে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন মা । অবশেষে মায়ের কাছে সন্তানের খোঁজ এনে দিল পুলিশ। কিন্তু জীবিত নয় মৃত। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর পুলিশ মো. ইমামুল হক ইমন (৩৫) নামে ওই ব্যক্তির মরদেহ শনাক্ত করেছে। মরদেহটি এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমাগারে রয়েছে। দূর্ঘটনায় নিহত ইমন হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শরীফনগর গ্রামের মৃত শামছুদ্দিনের ছেলে। তার স্বজনরা মরদেহটি আনার জন্য মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সেখানে গেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইমন প্রায় ১৬ বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এরপর দীর্ঘদিন ধরে তার মা আয়েশা আক্তার ভাই জিয়াউল হক ও মইনুল হক দেশজুড়ে ইমনকে খোঁজাখুজি করেছেন, কিন্তু কোথাও সন্ধান পাননি। খোঁজতে খোঁজতে আয়েশা আক্তার তার ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। এদিকে কয়েকদিন আগে রাজধানীর কাফরুল থানা পুলিশ একটি রক্তাক্ত মরদেহ পায় এবং মরদেহের সঙ্গে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তারা ইমনকে শনাক্ত করেন।
পরে আজমিরীগঞ্জ থানায় ছবি পাঠালে ইমনের পরিবারের সদস্যরাও থানায় এসে মরদেহটি শনাক্ত করেন। দীর্ঘ ১৬ বছর খোঁজে ফেরা ছেলের রক্তাক্ত মরদেহের খবর পাওয়ার পর ইমনের মা ভেঙে পড়েছেন। তিনি কান্নাকাটি করে বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন। পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় মরদেহ নিয়ে আসার খরচও তাদের ছিল না। খবর পেয়ে পাড়া-প্রতিবেশীরা টাকা দিয়ে সাহায্য করে ইমনের ছোট ভাই মইনুল হককে মরদেহ আনার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরুল ইসলাম জানান, প্রায় এক সপ্তাহ আগে ইমন ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। কাফরুল থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গের হিমাগারে রেখেছে। জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা অনুযায়ী তারাই আজমিরীগঞ্জ থানায় খবর দিয়েছে। ইমনের পরিবারের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, তিনি প্রায় ১৬ বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। এতদিন পর রক্তাক্ত মরদেহ শনাক্তের খবর পাওয়ায় মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা ভেঙে পড়েছেন। পুলিশ মরদেহ আজমিরীগঞ্জ পাঠানোর জন্য কাজ করছে।