ঢাকা ০৫:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৮ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo বানিয়াচংয়ে স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার Logo এমপি মজিদ খানের মধ্যস্থতায় বানিয়াচং সৈদারটুলা ছান্দের ২ গ্রুপের দ্বন্দ্ব নিরসন Logo মিশর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান পাওয়ায় মুফতি হাফিজুল হককে সংবর্ধনা প্রদান Logo আজমিরীগঞ্জে নিত্যপণ্যের মূল্য চড়া: ক্রেতাদের নাভিশ্বাস Logo একজন কর্মবীর সফল এমপি আব্দুল মজিদ খান Logo বানিয়াচংয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ’কে বিদায় সংবর্ধনা Logo জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী মনজুর চৌধুরী Logo বানিয়াচংয়ে ইফা শিক্ষকদের নিয়ে ক্লাস্টার ট্রেনিং অনুষ্ঠিত Logo আজমিরীগঞ্জে পুলিশের অভিযানে ২০লিটার চোলাই মদ জব্দ : আটক-১ Logo প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) হলেন গোটা জাতির জন্য উত্তম আদর্শ

অনলাইন ক্লাস এবং পাঠদানের ভিডিও নিয়ে ভাবনা

  • তরঙ্গ ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০১:২৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ অগাস্ট ২০২০
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

আব্দুর রউফ :  অনলাইনে লাইভ ক্লাস করা কিংবা ভিডিও করা পাঠ পরবর্তীতে দেখার জন্য স্মার্ট ডিভাইস এবং ইন্টারনেট সংযোগ (ওয়াই ফাই অথবা মোবাইল ডাটা) আবশ্যক। আমাদের দেশের বেশির ভাগ পরিবারেই স্মার্ট ফোন। আর যাদের আছে ৫০০ উপজেলা সদর বাদ দিলে গ্রামে নেটওয়ার্ক খুবই দূর্বল। সেখানে ভিডিও স্ট্রিমিং চিন্তাই করা যায়না। সেক্ষেত্রে সকল মোবাইল অপারেটরের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হওয়া জরুরী।

সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ডাটার চড়া মূল্য। সপ্তাহের জন্য ১০০ টাকার নিচে কোনো প্যাক নেই। যেগুলো আছে সেগুলো দিয়ে ভিডিও দেখা বা অনলাইন ক্লাস করা কোনোটাই সম্ভব নয়। গ্রামে যাদের স্মার্ট ফোন রয়েছে তারা ২৫ এমবি আর ৫০ এমবি-র ডাটা কার্ড কিনে ব্যবহার করে। তাদের কাছে ১ জিবি ডাটা কেনা স্বপ্নের ব্যাপার। ডাটার মূল্য সহনীয় পর্যায়ে না আসলে এত কষ্ট করে ক্লাস নেয়া কিংবা ভিডিও তৈরি করে আপলোড করা এর কোনোটাই সফল হবে না।

প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে অন্তত দুই শতাধিক বই রয়েছে। এই বইগুলোতে রয়েছে হাজার হাজার অধ্যায়। অধ্যায়ে আবার বিভিন্ন ভাগ রয়েছে। কোন অধ্যায় পাঠদান করতে হবে, কোন অধ্যায় থেকে পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে সে সর্ম্পকে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই, রুটিন নেই, প্ল্যান নেই। যার যেখান থেকে ইচ্ছে, যে বিষয়ে ইচ্ছে পাঠদান করছেন। তাছাড়া হাজার হাজার ক্লাস তৈরি করা, সময় নিয়ে দেখা, এগুলোর জন্য ডাটা খরচ করা কোনোটাই সাধ্যের ভেতরে নয়।

আরেকটি বিরূপ প্রভাব হলো শিশুদের যেখানে আমরা ডিভাইস থেকে দূরে রাখতে চাই সেখানে এখন বাধ্য হয়ে তাদের হাতে আমরা ডিভাইস তুলে দিচ্ছি তাও আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ। এতে করে তাদের আসক্তি তৈরি হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে ভালো কনটেন্টের পাশাপাশি খারাপ কনটেন্টও সামনে চলে আসে অথবা খুঁজে পাওয়া যায়। এডাল্ট ভিডিও, এডাল্ট বিজ্ঞাপন এগুলো ভিন্ন প্রভাব ফেলবে শিশুদের মনে। বিশেষ করে বয়:সন্ধি পার হওয়া ছেলে মেয়েদের। এটা রোধ করার উপায় খুব একটা নেই। তাই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কিন্তু এ বিষয়ে কতজন অভিভাবক সচেতন? তারা তো মনে করতেই পারেন আমার সন্তান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পড়ালেখা করছে।

তবে আশার কথা হলো এই ক্লাস নেওয়া কিংবা ভিডিও তৈরি করে আপলোড করার মাধ্যমে আমরা একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছি। শিক্ষকগণ একজন আরেকজনের ক্লাস দেখছেন, নিজেরটার সাথে তুলনা করছেন, নতুন নতুন আইডিয়া গ্রহণ করছেন, নিজের উপস্থাপনার উন্নতি ঘটাচ্ছেন এটাও এক ধরনের লাভ। তাই আমি এর বিপক্ষে নই।

টেলিভিশন, রেডিও, কমিউনিটি রেডিও, এফএম রেডিও, মোবাইল ফোন প্রত্যেকটি মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদানের চেষ্টা করছি। কোনো একটা মাধ্যমও যদি কোনো শিক্ষার্থী ব্যবহার করে তাহলে সে হয়তো পড়ার জগৎ থেকে হারিয়ে যাবেনা।

স্বল্পমূল্যে স্মার্ট ডিভাইস ও ডাটা নিশ্চিত করতে পারলে এবং প্ল্যান নিয়ে অগ্রসর হলে একদিন আমরা সফল হবই।

এই ভাবনাগুলো আমার ব্যক্তিগত। ভিন্নমত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আলোচনা চলতে পারে।

লেখক : ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, উপজেলা রিসোর্স সেন্টার, বাহুবল, হবিগঞ্জ।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বানিয়াচংয়ে স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

অনলাইন ক্লাস এবং পাঠদানের ভিডিও নিয়ে ভাবনা

আপডেট সময় ০১:২৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ অগাস্ট ২০২০

আব্দুর রউফ :  অনলাইনে লাইভ ক্লাস করা কিংবা ভিডিও করা পাঠ পরবর্তীতে দেখার জন্য স্মার্ট ডিভাইস এবং ইন্টারনেট সংযোগ (ওয়াই ফাই অথবা মোবাইল ডাটা) আবশ্যক। আমাদের দেশের বেশির ভাগ পরিবারেই স্মার্ট ফোন। আর যাদের আছে ৫০০ উপজেলা সদর বাদ দিলে গ্রামে নেটওয়ার্ক খুবই দূর্বল। সেখানে ভিডিও স্ট্রিমিং চিন্তাই করা যায়না। সেক্ষেত্রে সকল মোবাইল অপারেটরের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হওয়া জরুরী।

সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ডাটার চড়া মূল্য। সপ্তাহের জন্য ১০০ টাকার নিচে কোনো প্যাক নেই। যেগুলো আছে সেগুলো দিয়ে ভিডিও দেখা বা অনলাইন ক্লাস করা কোনোটাই সম্ভব নয়। গ্রামে যাদের স্মার্ট ফোন রয়েছে তারা ২৫ এমবি আর ৫০ এমবি-র ডাটা কার্ড কিনে ব্যবহার করে। তাদের কাছে ১ জিবি ডাটা কেনা স্বপ্নের ব্যাপার। ডাটার মূল্য সহনীয় পর্যায়ে না আসলে এত কষ্ট করে ক্লাস নেয়া কিংবা ভিডিও তৈরি করে আপলোড করা এর কোনোটাই সফল হবে না।

প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে অন্তত দুই শতাধিক বই রয়েছে। এই বইগুলোতে রয়েছে হাজার হাজার অধ্যায়। অধ্যায়ে আবার বিভিন্ন ভাগ রয়েছে। কোন অধ্যায় পাঠদান করতে হবে, কোন অধ্যায় থেকে পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে সে সর্ম্পকে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই, রুটিন নেই, প্ল্যান নেই। যার যেখান থেকে ইচ্ছে, যে বিষয়ে ইচ্ছে পাঠদান করছেন। তাছাড়া হাজার হাজার ক্লাস তৈরি করা, সময় নিয়ে দেখা, এগুলোর জন্য ডাটা খরচ করা কোনোটাই সাধ্যের ভেতরে নয়।

আরেকটি বিরূপ প্রভাব হলো শিশুদের যেখানে আমরা ডিভাইস থেকে দূরে রাখতে চাই সেখানে এখন বাধ্য হয়ে তাদের হাতে আমরা ডিভাইস তুলে দিচ্ছি তাও আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ। এতে করে তাদের আসক্তি তৈরি হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে ভালো কনটেন্টের পাশাপাশি খারাপ কনটেন্টও সামনে চলে আসে অথবা খুঁজে পাওয়া যায়। এডাল্ট ভিডিও, এডাল্ট বিজ্ঞাপন এগুলো ভিন্ন প্রভাব ফেলবে শিশুদের মনে। বিশেষ করে বয়:সন্ধি পার হওয়া ছেলে মেয়েদের। এটা রোধ করার উপায় খুব একটা নেই। তাই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কিন্তু এ বিষয়ে কতজন অভিভাবক সচেতন? তারা তো মনে করতেই পারেন আমার সন্তান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পড়ালেখা করছে।

তবে আশার কথা হলো এই ক্লাস নেওয়া কিংবা ভিডিও তৈরি করে আপলোড করার মাধ্যমে আমরা একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছি। শিক্ষকগণ একজন আরেকজনের ক্লাস দেখছেন, নিজেরটার সাথে তুলনা করছেন, নতুন নতুন আইডিয়া গ্রহণ করছেন, নিজের উপস্থাপনার উন্নতি ঘটাচ্ছেন এটাও এক ধরনের লাভ। তাই আমি এর বিপক্ষে নই।

টেলিভিশন, রেডিও, কমিউনিটি রেডিও, এফএম রেডিও, মোবাইল ফোন প্রত্যেকটি মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদানের চেষ্টা করছি। কোনো একটা মাধ্যমও যদি কোনো শিক্ষার্থী ব্যবহার করে তাহলে সে হয়তো পড়ার জগৎ থেকে হারিয়ে যাবেনা।

স্বল্পমূল্যে স্মার্ট ডিভাইস ও ডাটা নিশ্চিত করতে পারলে এবং প্ল্যান নিয়ে অগ্রসর হলে একদিন আমরা সফল হবই।

এই ভাবনাগুলো আমার ব্যক্তিগত। ভিন্নমত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আলোচনা চলতে পারে।

লেখক : ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, উপজেলা রিসোর্স সেন্টার, বাহুবল, হবিগঞ্জ।