ঢাকা ১১:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সাংবাদিক মঈন উদ্দিন এঁর পিতার মৃত্যুতে তরঙ্গ২৪.কম পরিবার গভীরভাবে শোকাহত Logo গ্যানিংগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদযাপন Logo মহান বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে বানিয়াচং মডেল প্রেসক্লাব Logo দেশবাসীকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ‘বানিয়াচং ইসলামি নাগরিক ফোরাম’ নেতৃবৃন্দ Logo নূরানী শিক্ষা বোর্ডে মেধা তালিকায় ২য় হয়েছে গ্যানিংগঞ্জ বাজার নূরানী মাদ্রাসার ছাত্রী মুনতাহা আক্তার Logo বানিয়াচংয়ে ১২কেজি গাঁজাসহ কুখ্যাত ৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার Logo বানিয়াচং শাহজালাল কে.জি স্কুল ২০২৩ বৃত্তি পরীক্ষায় ঈর্ষণীয় সাফল্য Logo চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন ডা. ইলিয়াছ একাডেমির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত Logo ৪০তম তাফসিরুল কোরআন মহা সম্মেলন সফল করায় আলহাজ্ব রেজাউল মোহিত খানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ Logo ইফার সাবেক ফিল্ড অফিসার আব্দুল ওয়াদুদের মৃত্যুতে জেলা মউশিক কল্যাণ পরিষদ নেতৃবৃন্দের শোক

জনদুর্ভোগ লাঘবে গণপরিবহন খুলে দেয়া হোক

সাইফুর রহমান কায়েস : মানুষকে আজ থেকেই তার কর্মস্থলে ফিরতে হবে জীবিকার্জন নিশ্চিত করতে । যে মানুষগুলো জীবনের তাগিদে শিকড়ের টানে বাড়ি ফিরেছিলেন সকল অনিশ্চয়তাকে তুচ্ছ জ্ঞান করে সে মানুষেরাই আবার ঘর ছেড়ে দেশের নানাপ্রান্ত ও প্রান্তরে ছুটবেন আজ থেকে । তাদের ছুটাছুটির ফলে অনেক প্রাণেরই ক্ষয় হয়েছে ।এটা জাতীয় দুর্যোগে সরকারের অব্যবস্থাপনারই ফল ।
করোনা সংক্রমণের দোহাই দিয়ে শুধু গণপরিবহনকেই লাগাম টেনে ধরে রাখলেও আর কোনোকিছুইতেই এর প্রভাব চোখে পড়েনি । বাজারঘাট , দোকানপাট , শপিংমল , সুপারমার্কেট সহ অনেককিছুই তো খোলা রাখা হয়েছে । অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে কোথাও করোনার দাপট নেই , ছিলো না । ছিলো শুধু গণপরিবহনে । ছিলো গরীব রিকশাওয়ালা র টিউবে আর টায়ারে । রিকশার চাকা উল্টে দিলেই করোনা চলে যায়। আর থাকে ডাক্তারের আইডি কার্ড না দেখানোর মাঝে ।এতে করে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে ।
ঊনের ঘরে দোনা টাকা খরচ করে তাদেরকে ভ্রমণ করতে হয়েছে । সিলেট থেকে বাসে দীঘিনালা যেতে যেখানে সাতশো টাকা লাগতো সেখানে খরচ হয়েছে মাথাপিছু বত্রিশ শো থেকে সাড়ে তিন হাজার । আসাযাওয়া বাবদ গুণতে হবে মারহাপিছু সাত হাজার টাকা । অথচ যাদের উপর এই খড়্গটি চাপিয়ে দেয়া হলো তারা কিন্তু মধ্যম আয়ের মানুষ । অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিম্নপ্রান্তিক আয়ের মানুষেরাও রয়েছেন । যারা দেশের একেবারে প্রান্তের জনপদ থেকে পরিজন নিয়ে আবার বড় শহরে ফিরবেন তাদের অবস্থা ইতিমধ্যেই দুরবস্থাপন্ন হয়ে পড়েছে । সাথে শারীরিক , আর্থিক এবং মানসিক চাপ তো রয়েছেই ।
মাসের বাকী দিনগুলি যে তারা কিভাবে চলবেন সে হিসাব কর্তা ব্যক্তিদের মগজে নাই । এই প্রান্তিক শ্রেণির কালো টাকা নেই , সঞ্চয় নেই । আছে শুধু বুকের বল ও পাজর । সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে তাদের বুকের বল ও পাজর দুটোই ভেঙ্গে গেছে – যেটি অবশিষ্ট ছিলো ধরে নিয়েছিলেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ । এই শ্রেণি আবার এনজিওসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যভূক্ত জনগোষ্ঠী , যারা ঋণ নিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা করে জীবিকানির্বাহ করে থাকেন ।
আবার এদেরকে ঋণের খড়্গবানে জর্জরিত করতে না পারলে তাদের লালবাত্তি জ্বলতে থাকবে । এই ঋণচক্রের উপর গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা ঘোরা বা না ঘোরার বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত । এই এনজিওগুলি ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোগের পেছনের পুজির যোগানদার ।
ব্যবস্যার প্রসার অবিসংবাদিতভাবে যোগাযোগব্যবস্থার অবাধ ও নির্বিঘ্নতার উপর পুরোপুরিভাবে নির্ভরশীল । সহজলভ্য যোগাযোগব্যবস্থা ও পরিবহনসেবা চালুর মাধ্যমে পণ্যের সুলভ ও সাশ্রয়ী মূল্য নির্ধারণ সম্ভব এবং অত্যাবশ্যকীয়ভাবে তা জনসাধারণের সাশ্রুলোচনেরও অন্যতম কারণ ।
তাই আমরা মনে করি এইদেশকে ফড়ে, দালালদের হাত উদ্ধার করে গণপরিবহনের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা হোক ।
দূরপাল্লার বাস ও ট্রেন চলাচল উণ্মুক্ত করে দেয়া হোক । জনমনে ও জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা হোক । চাপিয়ে দেয়া খড়্গ থেকে মুক্তি চায় দেশের জনগণ । অন্ততঃ দুই সপ্তাহের জন্য খুলে দেয়া হোক ।
ভোক্তভোগী জনসাধারণ , যাদের বেগমপাড়ায় বাড়ি নেই মা আ হানিফের মতো যাদের পরিবার কানাডায় থাকেন না , মালয়েশিয়া বা অষ্ট্রেলিয়ায় যাদের দ্বিতীয় স্বদেশ বলে কিছুই নেই । এদের আছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাড়ি । যেখানে তাদের নাড়ীনক্ষত্র পোতাশ্রয় ।
এদের সুইস ব্যাংকে নয় , কোমরের খতিতে থাকে কিছু ঘামেভেজা কাগজি নোট আর ধাতবমুদ্রা । আর থাকে খেয়েপরে বেচে থাকার স্বপ্ন ।
লেখক : প্রধান সম্পাদক, শব্দকথা টোয়েন্টিফোর ডটকম।
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক মঈন উদ্দিন এঁর পিতার মৃত্যুতে তরঙ্গ২৪.কম পরিবার গভীরভাবে শোকাহত

জনদুর্ভোগ লাঘবে গণপরিবহন খুলে দেয়া হোক

আপডেট সময় ১১:৩৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মে ২০২১
সাইফুর রহমান কায়েস : মানুষকে আজ থেকেই তার কর্মস্থলে ফিরতে হবে জীবিকার্জন নিশ্চিত করতে । যে মানুষগুলো জীবনের তাগিদে শিকড়ের টানে বাড়ি ফিরেছিলেন সকল অনিশ্চয়তাকে তুচ্ছ জ্ঞান করে সে মানুষেরাই আবার ঘর ছেড়ে দেশের নানাপ্রান্ত ও প্রান্তরে ছুটবেন আজ থেকে । তাদের ছুটাছুটির ফলে অনেক প্রাণেরই ক্ষয় হয়েছে ।এটা জাতীয় দুর্যোগে সরকারের অব্যবস্থাপনারই ফল ।
করোনা সংক্রমণের দোহাই দিয়ে শুধু গণপরিবহনকেই লাগাম টেনে ধরে রাখলেও আর কোনোকিছুইতেই এর প্রভাব চোখে পড়েনি । বাজারঘাট , দোকানপাট , শপিংমল , সুপারমার্কেট সহ অনেককিছুই তো খোলা রাখা হয়েছে । অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে কোথাও করোনার দাপট নেই , ছিলো না । ছিলো শুধু গণপরিবহনে । ছিলো গরীব রিকশাওয়ালা র টিউবে আর টায়ারে । রিকশার চাকা উল্টে দিলেই করোনা চলে যায়। আর থাকে ডাক্তারের আইডি কার্ড না দেখানোর মাঝে ।এতে করে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে ।
ঊনের ঘরে দোনা টাকা খরচ করে তাদেরকে ভ্রমণ করতে হয়েছে । সিলেট থেকে বাসে দীঘিনালা যেতে যেখানে সাতশো টাকা লাগতো সেখানে খরচ হয়েছে মাথাপিছু বত্রিশ শো থেকে সাড়ে তিন হাজার । আসাযাওয়া বাবদ গুণতে হবে মারহাপিছু সাত হাজার টাকা । অথচ যাদের উপর এই খড়্গটি চাপিয়ে দেয়া হলো তারা কিন্তু মধ্যম আয়ের মানুষ । অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিম্নপ্রান্তিক আয়ের মানুষেরাও রয়েছেন । যারা দেশের একেবারে প্রান্তের জনপদ থেকে পরিজন নিয়ে আবার বড় শহরে ফিরবেন তাদের অবস্থা ইতিমধ্যেই দুরবস্থাপন্ন হয়ে পড়েছে । সাথে শারীরিক , আর্থিক এবং মানসিক চাপ তো রয়েছেই ।
মাসের বাকী দিনগুলি যে তারা কিভাবে চলবেন সে হিসাব কর্তা ব্যক্তিদের মগজে নাই । এই প্রান্তিক শ্রেণির কালো টাকা নেই , সঞ্চয় নেই । আছে শুধু বুকের বল ও পাজর । সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে তাদের বুকের বল ও পাজর দুটোই ভেঙ্গে গেছে – যেটি অবশিষ্ট ছিলো ধরে নিয়েছিলেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ । এই শ্রেণি আবার এনজিওসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যভূক্ত জনগোষ্ঠী , যারা ঋণ নিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা করে জীবিকানির্বাহ করে থাকেন ।
আবার এদেরকে ঋণের খড়্গবানে জর্জরিত করতে না পারলে তাদের লালবাত্তি জ্বলতে থাকবে । এই ঋণচক্রের উপর গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা ঘোরা বা না ঘোরার বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত । এই এনজিওগুলি ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোগের পেছনের পুজির যোগানদার ।
ব্যবস্যার প্রসার অবিসংবাদিতভাবে যোগাযোগব্যবস্থার অবাধ ও নির্বিঘ্নতার উপর পুরোপুরিভাবে নির্ভরশীল । সহজলভ্য যোগাযোগব্যবস্থা ও পরিবহনসেবা চালুর মাধ্যমে পণ্যের সুলভ ও সাশ্রয়ী মূল্য নির্ধারণ সম্ভব এবং অত্যাবশ্যকীয়ভাবে তা জনসাধারণের সাশ্রুলোচনেরও অন্যতম কারণ ।
তাই আমরা মনে করি এইদেশকে ফড়ে, দালালদের হাত উদ্ধার করে গণপরিবহনের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা হোক ।
দূরপাল্লার বাস ও ট্রেন চলাচল উণ্মুক্ত করে দেয়া হোক । জনমনে ও জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা হোক । চাপিয়ে দেয়া খড়্গ থেকে মুক্তি চায় দেশের জনগণ । অন্ততঃ দুই সপ্তাহের জন্য খুলে দেয়া হোক ।
ভোক্তভোগী জনসাধারণ , যাদের বেগমপাড়ায় বাড়ি নেই মা আ হানিফের মতো যাদের পরিবার কানাডায় থাকেন না , মালয়েশিয়া বা অষ্ট্রেলিয়ায় যাদের দ্বিতীয় স্বদেশ বলে কিছুই নেই । এদের আছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাড়ি । যেখানে তাদের নাড়ীনক্ষত্র পোতাশ্রয় ।
এদের সুইস ব্যাংকে নয় , কোমরের খতিতে থাকে কিছু ঘামেভেজা কাগজি নোট আর ধাতবমুদ্রা । আর থাকে খেয়েপরে বেচে থাকার স্বপ্ন ।
লেখক : প্রধান সম্পাদক, শব্দকথা টোয়েন্টিফোর ডটকম।